ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

কোটা সংস্কার আন্দোলন

রংপুরে আ.লীগের দুই অফিসে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, দুই মামলা দায়ের 

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৪, ২৭ জুলাই ২০২৪  
রংপুরে আ.লীগের দুই অফিসে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, দুই মামলা দায়ের 

রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। এ ঘটনায় রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানায় ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় কার্যালয় দুইটির ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ দেখানো হয়েছে প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে মামলার বিষয়টি রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল ও মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম। 

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেলে নগরীর বেতপট্টি মোড়ে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগের প্রবেশদ্বার ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। একে একে কার্যালয়ের গ্রিল, দরজা, চেয়ার-টেবিল ও আসবাবপত্রসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়। পরে ভাঙচুর করা জিনিসপত্র স্তূপ করে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। লুট করে কার্যালয়ে থাকা টিভি এসিসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল। 

জেলা আওয়ামী লীগের পর উল্লাস করে পাশের গলিতে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়েও একিই কায়দায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবের হাত থেকে রেহাই পায়নি জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ও। তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলমান থাকলেও এরই মধ্যে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে পৃথক দুইটি মামলা। 

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম বলেন, রংপুরের বাহিরে থেকে জামায়াত-বিএনপির লোকজন শহরে জড়ো হয়ে ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমি বাদী হয়ে ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছি। ছাত্র আন্দোলনের নামে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রায় ২৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

এজাহার নামীও আসামিরাসহ এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির দাবি করেন মামলার বাদী ও মহানগর আওয়ামী লীগের এই নেতা। 

এছাড়াও রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের জেলা কমিটির সদস্য জিন্নাত আলী বাবলু বাদী হয়ে গত ২৩ জুলাই মহানগর কোতোয়ালি থানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে একটি মামলা করেন। এই মামলায় আসামি করা হয় ৭২ জনকে। আর অজ্ঞাতনামায় আরও কয়েকশ জন আসামি। 

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল জানান, সেদিন ছাত্র আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে ঘাপটি মেরে থাকা বিএনপি জামায়াত ও শিবিরের বাহিনীরা জঙ্গি স্টাইলে ধ্বংসযোগ্য চালিয়েছে। প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিনও ছাত্ররা একটি মিছিল বের করে বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখে যায়। আমরা সকাল থেকে পার্টি অফিসে শত শত নেতাকর্মী অবস্থান করেছিলাম। দুপুরের পর কর্মীরা ক্লান্ত হয়ে খাওয়ার জন্য বাসায় বাসায় চলে যায়। আর মুহূর্তেই সেই সুযোগ নেয় দুষ্কৃতিকারীরা। এই ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মেন্তাছের বিল্লাহ জানান, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এমন নারকীয় তাণ্ডবের সাথে জড়িত কেউই পার পাবে না। সকলকে আইনের আওতায় আসতেই হবে। এ ব্যাপারে পুলিশের অবস্থান খুবই শক্ত। 

উল্লেখ্য, কোটা আন্দোলনের সময় রংপুরের সহিংসতায় এখন পর্যন্ত জেলা পুলিশ, হানগর পুলিশ ও র‍্যাবসহ অন্যান্য সংস্থার পক্ষ থেকে মোট ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত পর্যন্ত এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২ শতাধিক আসামি।

আমিরুল/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়