ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

টানা বর্ষণ 

ভেসে গেছে হাজার বিঘা মাছের ঘের ও ফসলি জমি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ২ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১১:০৪, ২ আগস্ট ২০২৪
ভেসে গেছে হাজার বিঘা মাছের ঘের ও ফসলি জমি

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সাতক্ষীরায় টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে জেলার নিম্নাঞ্চল। ভেসে গেছে হাজার বিঘা মাছের ঘের ও ফসলি জমি। এতে সদ্য রোপা আমন ও আউশ ধানের বীজ তলিয়ে গেছে।  

সাতক্ষীরা পৌরসভার নিচু এলাকা এখন পানির নিচে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার আশংকা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। বেশকিছু এলাকায় মানুষের বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে।

এদিকে বেতনা নদী তীরবর্তী এই বিলগুলোর পানি নদীতে যেতে পারছে না। এই পানি পৌরসভার দিকে এগিয়ে আসছে। অতিবৃষ্টিতে গ্রামাঞ্চলের সব পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে।

সাতক্ষীরার আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল ১০টা পর্যন্ত গত দুই দিনে ১৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছা এলাকার আলীনুর খান বাবুল জানান, পৌরসভায় পানি নিষ্কাশনে যথাযথ ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ বছরের পর বছর ধরে জলাবদ্ধতায় ভুগছে। গত দুই দিনের টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে পৌরসভার ইটাগাছা, কামাননগর, রসুলপুর, মেহেদিবাগ, মধুমোল্লারডাঙ্গী, বকচরা, সরদারপাড়া, পলাশপোল, পুরাতন সাতক্ষীরা, রাজারবাগান, বদ্দিপুর কলোনি, ঘুটিরডাঙি ও কাটিয়া মাঠপাড়াসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।

তিনি আরো জানান, গুটিকয়েক লোক পৌরসভার মধ্যে অপরিকল্পিত মাছের ঘের করার কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর এলাকার বাসিন্দা ডা. দিনেশ জানান, ধুলিহর, ফিংড়ি, ব্রহ্মরাজপুর, লাবসা, বল্লী, ঝাউডাঙা ইউনিয়নের বিলগুলোতে সদ্য রোপা আমন ও বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানি অপসারণের কোনো পথ না থাকায় বৃষ্টির পানি বাড়িঘরে উঠতে শুরু করেছে।

সাতক্ষীরা শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রাণসায়ের খালও পানি টানতে পারছে না। প্লাবিত এলাকার কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে।

অতিবৃষ্টির ফলে গদাইবিল, ছাগলার বিল, শ্যাল্যের বিল, বিনেরপোতার বিল, রাজনগরের বিল, মাছখোলার বিলসহ কমপক্ষে ১০টি বিলে পানি থই থই করছে। এসব বিলের মাছের ঘের ভেসে গেছে।

এদিকে, বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও আশাশুনিসহ জেলার সাতটি উপজেলা। সেখানে প্রধান রাস্তার ওপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এসব এলাকার মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ভারী বর্ষণে জেলার নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সদ্য রোপা আমন ও আউশ ধানের বীজ তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের জরিপ করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান,  মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গত দুই দিনে সাতক্ষীরায় ১৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সামনে এমন বৃষ্টিপাতের আরও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। 

শাহীন/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়