কালিয়াকৈরে পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ-হামলা-ভাঙচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর || রাইজিংবিডি.কম
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ছাত্রদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে রোববার (৪ আগস্ট) আওয়ামী লীগের অফিস ও পুলিশ বক্সে আগুন, থানায় হামলার চেষ্টা এবং নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের নিচে থাকা কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বাধা দিলে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
এছাড়াও উপজেলার সফিপুর আনসার একাডেমীর ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে আনসার সদস্যদের সাথে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পৃথক এসব ঘটনায় বেশ কিছু মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা যায়। আহতদের উপজেলা বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বিতরে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে মৌচাক ও তেলিচালা ও কোনাবাড়ি এলাকার সব কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে কারখানা শ্রমিকরা বের হয়েই সরকার বিরোধী শ্লোগান নিয়ে কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রার দিকে যেতে শুরু করে। চন্দ্রা লোকসমাগম বেশি হওয়ায় শ্রমিকরা সফিপুর আনসার একাডেমীর সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে দুপুর দেড়টার দিকে আনসার ভিডিপি একাডেমীর সামনে থাকা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করার চেষ্টা করে। এ সময়ে আনসার সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ করে রাবার বুলেট ছুড়ে। দিনভর আনসার ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ অবস্থা চলতে থাকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। পরে বিপুল সংখ্যা আনসার সদস্য একযোগে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেন্ডেন ছুড়তে ছুড়তে প্রায় এককিলোমিটার পর্যন্ত ধাওয়া করলে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এতে আন্দোলনকারী, পথচারীসহ অনেকেই আহত হন।
এদিকে আন্দোলনকারীরা কালিয়াকৈর থানায় হামলা চালাতে ব্যর্থ হয়ে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ফাঁড়ির তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে সকল আসবাবপত্র, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ রাস্তায় নিয়ে এসে অগ্নিসংযোগ করে।
এছাড়াও গাজীপুর শহরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে। পরে বিকেলের দিকে শিক্ষার্থীরা হামলা চালিয়ে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান হোসেন জানান, আন্দোলনের কারণে গাজীপুরের অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। পরে তারা বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
কালিয়াকৈর থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, আন্দোলনকারীরা থানায় হামলার চেষ্টা করে। পরে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
রেজাউল/ইমন