ঢাকা     বুধবার   ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ১ ১৪৩১

বরগুনায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে গণলুট-আগুন-ভাঙচুর

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩০, ৬ আগস্ট ২০২৪  
বরগুনায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে গণলুট-আগুন-ভাঙচুর

শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই বরগুনায় আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতঘরে হামলা চালিয়ে গণলুট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল থেকে আওয়ামীবিরোধী স্লোগানসহ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দলে দলে লোকজন জেলা সদরে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এসব লুট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর প্রচারিত হওয়ার পরপরই  শত শত মানুষ মিছিল নিয়ে বরগুনা  শের-ই- বাংলা্ সড়কে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এরপর বরগুনা -১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ারের কার্যালয়ে  হামলা চালান একদল যুবক।

এছাড়া আলাদা আলাদা কয়েকটি দল বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবিরের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। এরপর হামলাকারীরা শহরের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর রাতভর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বাসায় লুট করেন দুর্বৃত্তরা।

মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, রাতেই দরজা জানালা খুলে নিয়ে গেছে। সকাল থেকে তার দেয়ালের ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সোমবার বিকাল ৪টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয় এলাকায় অবস্থিত নৌকা জাদুঘরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্স ভাঙচুর করেন তারা। জেলা প্রশাসক কাযালয় ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত কার্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে বঙ্গবন্ধুর  মুরাল  ভাঙচুর করা হয়। এ সময় কোনো আইনশৃঙ্খল বাহিনীকে দেখা যায়নি।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পৌর শহরের ২৬টি গার্মেন্টসের দোকানে লুট করা হয়েছে। স্বর্ণকার পট্টির অন্তত তিনটি দোকান লুট হয়েছে। পশ্চিম বরগুনায় ইয়ামাহা কোম্পানির শো-রুমে থাকা প্রায় ৩৫টি মোটরসাইকেল লুট হয়েছে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের খবরের পরপরই আমতলী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী ও বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করে। পরে তারা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের বাসভবন, আওয়ামী লীগ নেতা শহীদুল ইসলাম মৃধার বাসভবনে আগুন, বরগুনা মহিলা এমপির কার্যালয়, চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খানের অস্থায়ী কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার দুপুরে এসব ভাঙচুর ও আগুন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র মতিয়ার রহমান এমন অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, আমার বাসভবনের আগুন, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরসহ বেশকিছু ভবনে দুস্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়েছে।

আমতলী উপজেলা যুবদল যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী জামান রাকিব বলেন, বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবরে আনন্দ মিছিল করেছে।

আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ছাত্র ও জনতা শান্তিপুর্ণভাবে আনন্দ মিছিল করেছে। কিন্তু আগুন ও ভাঙচুরের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি।

অপর দিকে তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস, ছোটবগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুর অস্থায়ী কার্যালয় এবং শ্রমিক লীগ অফিস ভাঙচুর করেছে। বামনা উপজেলায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ চন্দ্র হাওলাদারের বাস ভবনে ভাঙচুর ও লুট করেছে প্রায় শতাধীক যুবক। পাথরঘাটা উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা ভেঙে লুট করেছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।

হামলা -ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ও লুটের বিষয় জানতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মল হোসেনের  সরকারি মুঠোফোন নম্বরে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়