ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩২

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীদের ১২ দফা দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১২, ১১ আগস্ট ২০২৪  
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীদের ১২ দফা দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষসহ দুই শিক্ষকের পদত্যাগ, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ ১২ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে কলেজে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ও শিক্ষার্থীরা জানান, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর বিভাগের শিক্ষার্থীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা তিনটার দিকে বিভিন্ন সংস্কারের দাবিতে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা কলেজের উপাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক হামজা মাহমুদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আবু সালেহ মো. নইমুদ্দিনের পদত্যাগ, কলেজে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ ১২ দফা দাবি উত্থাপন করেন। 

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কয়েকজন কলেজের অধ্যাপক অধ্যক্ষ এ জেড এম আরিফসহ কলেজের শিক্ষকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় ১২ দফার দাবিগুলো লিখিতভাবে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে জমা দেন। বিষয়টি নিয়ে কলেজের সকল শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করেন কলেজের অধ্যক্ষ।

সংস্কারের ১২ দফা দাবিগুলো হলো- ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে সকল প্রকার রাজনীতি কলেজে নিষিদ্ধ করতে হবে, শিক্ষকরাও ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবে না এবং কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডাসহ কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পালিত হবে না। ক্লাসের মানোন্নয়নসহ শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যবই পৌঁছাতে পারছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। শেণিকক্ষে পড়ানো সিলেবাসের বিষয়বস্তর উপর পরীক্ষা নিতে হবে এবং হুটহাট নোটিসে বা শ্রেণিকক্ষে ঘোষণা দিয়ে দায় চাপানো যাবে না। শ্রেণি পরীক্ষা, অর্ধবার্ষিকী ও বাৎসরিক পরীক্ষা খাতা মূল্যায়নের পর নম্বরপত্রে নম্বর তুলে নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং মূল্যায়নের ধরনের জবাবদিহিতা শিক্ষকদের দিতে হবে। 

পরিকল্পিতভাবে ব্যবহারিক ক্লাসের সময় নির্ধারণসহ মানোন্নয়ন করতে হবে। কলেজে ধর্মপালন, হিজাব বা নিকাব পরিধানে কোনো প্রকার বাধা দেওয়া যাবে না এবং কোনো প্রকার কটুক্তি, অপমানমূলক কথা বা ইঙ্গিত কোনো শিক্ষক দিতে পারবে না। এমন হলে সেই শিক্ষকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতসহ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

ধর্মপালনে কোনো প্রকার বাধা দেওয়া যাবে না- সকল শিক্ষককে লিখিতভাবে এই বিবৃতি দিতে হবে এবং কলেজের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের বোঝাপড়া ও যোগাযোগ বাড়াতে হবে। প্রত্যেক শ্রেণিতে মনিটর নিয়োগ দেওয়াসহ শিক্ষকরা কীভাবে পাঠদান করাচ্ছেন সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে রিপোর্ট করবেন। শ্রেণিকক্ষের উন্নয়নসহ শিক্ষার্থীদের দ্বারা শ্রেণিকক্ষের কার্যক্রমে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভূক্তি বাড়াতে হবে। পড়াশোনায় প্রায় এক মাসের ক্ষতি হওয়ায় একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা বাতিলসহ সবাইকে অবিলম্বে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করে দ্বিতীয় বর্ষের পাঠদান শুরু করতে হবে। 

আন্দোলন চলাকালীন কলেজের উপাধ্যক্ষ নিজের ফেসবুকের মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলে সম্বোধন করেছিলেন। তাই উপাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। এবিষয়ে কলেজের ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে হবে। মেয়েদের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ নানা রকম অভিযোগ থাকায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আবু সালেহ মো. নইমুদ্দিনের পদত্যাগ বা বদলির দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ জেড এম আরিফ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কলেজের পাঠদান ও শ্রেণিকক্ষ সম্পর্কিত কয়েকটি দাবিসহ ১২ দফা দাবি উত্থাপন করেছে। তাদের অধিকাংশ দাবিগুলোই যৌক্তিক। কলেজের সকল শিক্ষকদের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা দাবিগুলো মেনেও  নিয়েছি। তারা কলেজের উপাধ্যক্ষ হামজা মাহমুদ এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আবু সালেহ মো. নইমুদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’

মাইনুদ্দীন রুবেল/সনি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়