চাঁদপুরে লাপাত্তা জনপ্রতিনিধিরা, সেবাপ্রত্যাশীদের ভোগান্তি
চাঁদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

আত্মগোপনে থাকা চাঁদপুরের জনপ্রতিনিধিরা। ফাইল ছবি
৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘটনার পর থেকে চাঁদপুরের মেয়রসহ আওয়ামী লীগের প্রায় সকল জনপ্রতিনিধি আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এদিকে শুধু চাঁদপুর সদরই নয়, অন্য সাত উপজেলায়ও একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফলে সেখানেও নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন রাসেলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান না এলেও আমরা নিয়মিত অফিসে আসছি। চেয়ারম্যান কবে আসবেন, তা বলতে পারব না। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও নিয়মিত অফিস করছেন।’
জানা যায়, ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ওচমান গণি পাটোয়ারী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হুমায়ন কবীর সুমন, পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক জিল্লুর রহমানসহ সদরের ১৪ ইউপি চেয়ারম্যানসহ তাদের প্যানেল চেয়ারম্যাণগণ। তবে লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওই দিন সন্ধ্যায় গণপিটুনিতে নিহত হন।
গত কয়েক দিন ধরেই চেয়ারম্যান ও মেয়রদের কক্ষ তালাবন্ধ পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাদের পরিষদগুলোর চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে আছে স্বীকার না করলেও নিরাপদ অবস্থানে আছেন বলে জানিয়েছেন।
সদরের বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার বলেন, ৫ আগস্টের পর চেয়ারম্যান পরিষদে আসেননি। আমরা সেবামূলক কাজ প্রস্তুত করে রেখেছি। কিন্তু উনার স্বাক্ষর ছাড়া দিতে পারছি না।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়া জামিল সৈকত বলেন, ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সেবা প্রত্যাশীরা যাতে কোনো দুর্ভোগে না পড়েন সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেসব জনপ্রতিনিধি উপস্থিত নেই তাদের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ৫ আগস্টের আগ থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন। তার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। মেয়রের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে পৌরসভার জরুরি সেবামূলক কার্যক্রম চলমান আছে।
এদিকে বুধবার (১৪ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই বিকল্প পদ্ধতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
পত্রে বলা হয়, যেহেতু উপজেলা পরিষদের অনেক প্যানেল চেয়ারম্যানগণও কর্মস্থলে ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করেও উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না মর্মে সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়। যেহেতু এ পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদসমূহের অনেক ধরনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে এবং জনসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। সেহেতু যে সকল উপজেলা পরিষদসমূহে এরূপ পরিস্থিতি উদ্ভূত হয়েছে, সে সকল উপজেলা পরিষদসমূহের সব ধরনের জনসেবা অব্যাহত রাখা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলমান রাখার নিমিত্ত প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণকে পুনরাদেশ না পাওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।
অমরেশ/ইমন