ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১১ ১৪৩১

মেয়র-কাউন্সিলর ছাড়াই চলছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৬, ১৭ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১২:৫২, ১৭ আগস্ট ২০২৪
মেয়র-কাউন্সিলর ছাড়াই চলছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

ঢাকার পরে দেশের সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশন চট্টগ্রাম। ৪১টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই সিটি করপোরেশন গত ৫ আগস্ট থেকে চলছে মেয়র কাউন্সিলর ছাড়াই। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পালিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। একই দিন থেকে লাপাত্তা অধিকাংশ কাউন্সিলর। হাতেগোনা কয়েকজন করপোরেশনে হাজিরা দিলেও নিয়মিত অফিস করছেন না। এর ফলে নাগরিক সেবা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় অনুপস্থিত বা পলাতক থাকা কাউন্সিলরদের তালিকা তৈরি করে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক বিভাগ। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিকেল থেকেই সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। সর্বশেষ আজ শনিবার (১৭ আগস্ট) মেয়রের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। একইভাবে পালিয়ে আছেন ৪১টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ কাউন্সিলর। শনিবার অন্তত ১৯ জন কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। 

সিটি করপোরেশনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্তত ২০ জন কাউন্সিলর অনুপস্থিত রয়েছেন। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরসহ ৫৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ফোনে ও ব্যক্তিগতভাবে ৩৫ জন কাউন্সিলর উপস্থিত আছেন বলে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। 

যেসব কাউন্সিলর পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন নগরীর জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, চকবাজার ওয়ার্ডের নুর মোস্তফা টিনু, চান্দগাঁও ওয়ার্ডের মো. এসরারুল হক অন্যতম। এই কাউন্সিলরদের ছাত্রদের আন্দোলন প্রতিরোধে দেখা গেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। 

এছাড়াও লাপাত্তা রয়েছেন- মোহরার মোহাম্মদ কাজী নুরুল আমিন, পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের এম আশরাফুল আলম, পশ্চিম ষোলশহরের মো. মোবারক আলী, উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের নিছার উদ্দিন আহমেদ (মঞ্জু), পাহাড়তলী ওয়ার্ডের মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, লালখান বাজার ওয়ার্ডের আবুল হাসনাত মো. বেলাল, দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের মো. নূরুল আলম, দেওয়ান বাজারের চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, এনায়েত বাজার ওয়ার্ডের মোহাম্মদ সলিম  উল্ল্যাহ, উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ, উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের নাজমুল হক ডিউক, রামপুর ওয়ার্ডের আব্দুস সবুর লিটন, উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডের মো. ইলিয়াছ, পাঠানটুলী ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম বাহাদুর, পশ্চিম মাদারবাড়ি ওয়ার্ডের গোলাম মো. জোবায়ের, পতেঙ্গা ওয়ার্ডের ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী অন্যতম। 

এদিকে ৪১ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পাশাপাশি চসিকে সংরক্ষিত আসনে ১০ জন মহিলা কাউন্সিলর রয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অফিস করছেন বলে জানা গেছে। 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বলেন, আমরা সব কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। অনেক কাউন্সিলর নিজ নিজ ওয়ার্ডে কাজ শুরু করেছেন। যারা অনুপস্থিত রয়েছেন তাদের তালিকা তৈরি করে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, যেসব কাউন্সিলর অনুপস্থিত রয়েছেন তাদের ওয়ার্ডের কার্যক্রম ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন করবেন। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়া গেছে। মেয়র কাউন্সিলর অনুপস্থিত থাকলেও নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে না।

রেজাউল/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়