ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৮ ১৪৩১

ব্যবসায়ীকে গুলির চেষ্টা, জবাবে প্রতিপক্ষের কর্মচারীকে ছুরিকাঘাত

সাভার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১১, ২০ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ২০:৪১, ২০ আগস্ট ২০২৪
ব্যবসায়ীকে গুলির চেষ্টা, জবাবে প্রতিপক্ষের কর্মচারীকে ছুরিকাঘাত

ঢাকার ধামরাইয়ে বিরোধের জের ধরে অটোরিকশা ব্যবসায়ীকে গুলি করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ধস্তাধস্তিকালে প্রতিপক্ষ ডিস ব্যবসায়ী রাকিবের কর্মচারীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। ছুরিকাহত তরুণ গত তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ধামরাই থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ডিস ব্যবসায়ী মশিউর রহমান রাকিব। গত শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলের দিকে উপজেলার ঢুলিভিটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ছুরিকাহত ইসমাইল হোসেন (২৬) ধামরাই পৌরসভার পাঠানটোলা এলাকার বাসিন্দা। হামলাকারী অটোরিকশা ব্যবসায়ী আবুল হোসেন পৌরসভার কালিয়াগার এলাকার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় ৪-৫ বছর ধরে স্থানীয় ডিস ব্যবসায়ী মশিউর ইসলাম রাকিব ও অটোরিকশা বিক্রেতা আবুল হোসেনের মধ্যে জমিজমার ব্যবসার টাকা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে গত ৫ আগস্ট রাতে রাকিবের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন আবুল। 

জবাবে ১৭ আগস্ট দুপুরের দিকে ঢুলিভিটা পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় আবুলের অটোরিকশা গ্যারেজে ৭-৮ জন সহযোগীসহ হামলা করেন রাকিব। এ সময় রাকিব আবুলের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে গুলি করার চেষ্টা করেন। তবে ওই সময় সে গুলি করতে ব্যর্থ হন। 

ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে রাকিবের সঙ্গে আসা ইসমাইল হোসেন (২৬) নামে একজনকে ছুরিকাঘাত করেন আবুল। এ ঘটনার জেরে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ইসমাইলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। গত তিন দিন ধরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘আমি পাশেই কাজ করছিলাম। ওই সময় পাশেই চিৎকার-চেচামেচির শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখি আবুল নিচে পড়ে আছে। তার বুকে বন্দুক তাক করে আছে রাকিব। তবে গুলি করতে পারেনি। ওই সময় ইসমাইলের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেন আবুল। এ সময় ধস্তাধস্তি ঠেকাতে সেখানে লোকজন জড়ো হলে রাকিব দৌড়ে পালিয়ে যান।’

এদিকে এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন মশিউর ইসলাম রাকিব। অভিযোগে তার দাবি, ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান করার সময় আবুল তার ওপর হামলা ও ছুরিকাঘাত করে।

মশিউর ইসলাম রাকিব বলেন, ‘ইসমাইল আমার এখানে কাজ করে। আবুল তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করে। সে এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমরা আবুলের বিচার চাই।’

তবে আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে আবুল হোসেনের শাস্তি দাবিতে সোমবার (১৯ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে ধামরাই উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।

ইসমাইলের বড় ভাই রাসেল জানান, তার ভাই পাঠানটোলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে রাকিবের ডিস ব্যবসার সহকারী হিসেবে কাজ করতো। ঘটনার দিন ঢুলিভিটা এলাকায় গেলে আবুল ইসমাইলকে মারধর করে তার পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। এলাকার লোকজন আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে ঢাকায় একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

এই বিষয়ে জানতে আবুল হোসেনের দোকানে ও তার বাড়ি গিয়ে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনের দুটি নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়।

ধামরাই থানায় দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সাব্বির/সনি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়