দু’দিন ধরে ১৩ গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ৪ শতাধিক
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
হবিগঞ্জের বাহুবলের মিরপুর বাজারে টাকা দেনা-পাওনাকে কেন্দ্র করে টানা দুই দিন ধরে দুই পরগনার ১৩টি গ্রামবাসীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই দফা সংঘর্ষে মিরপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় উভয় পক্ষের চার শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ সময় বশির প্লাজার সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপজেলার মিরপুর বাজারে টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে একই উপজেলার লামাতাসি গ্রামের টেইলার আলফু মিয়ার সঙ্গে বানিয়াগাঁও গ্রামের আকল আলীর ছেলে আল আমিনের কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি সমাধান করার জন্য বানিয়াগাঁও গ্রামের আ. শহিদ মিয়ার ছেলে সাদ্দাম মিয়া চেষ্টা করেন। সে সময় তার ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় আলফু মিয়ার লোকজন।
বিষয়টি উভয় পক্ষের গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে মিরপুর বাজারে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে লামাতাশি ও বানিয়াগাঁও গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে মিরপুর বাজারে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন লামাতাশি গ্রামের পক্ষে পাঁচ গ্রাম ও বানিয়াগাঁও গ্রামের মধ্যে আট গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুই পরগনার লোকজনের মধ্যে চলে ইট পাটকেল নিক্ষেপ, টানা রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য পটকা ফোটানো হয়। এক পর্যায়ে বশির প্লাজার সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেল ও কিছু চেয়ার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় মিরপুর বাজারের দোকান পাটেও হামলা ভাঙচুর করে সংঘর্ষকারীরা। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত ও মঙ্গলবার দুপুরে পুনরায় সংঘটিত সংঘর্ষে আহতদের বাহুবল ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তবে উভয় পক্ষে উত্তেজনা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ মারমুখি অবস্থানে থাকায় প্রাথমিকভাবে পিছু হটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ কারণে দীর্ঘ সময় ধরে চলে সংঘর্ষ।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাহুবল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফেজ কামরুল ইসলাম, মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামীম আহমদ, লামাতাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উস্তার মিয়াসহ স্থানীয় লোকজনের জোর চেষ্টার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে উভয় পক্ষের লোকজনকে বাড়িতে পাঠানো হয়। তবে মঙ্গলবার দুপুর থেকে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়।
মিরপুর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মোতাব্বির হোসেন বলেন, ‘সংঘর্ষে বাজারের অনেক দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
এ বিষয়ে বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমানকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মামুন চৌধুরী/সনি