শরীয়তপুর এজিপির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
শরীয়তপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
শরীয়তপুর জজ কোটের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এজিপি) হুমায়ুন কবির মুন্সি
শরীয়তপুর জজ কোর্টের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এজিপি) হুমায়ুন কবির মুন্সির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) শরীয়তপুর জজ কোটে মামলাটি করেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সেই সম্পদ দখলে রাখা ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদক আইন, ২০০৪ এর বিভিন্ন ধারায় মামলাটি হয়েছে।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুর সূত্র জানায়, শরীয়তপুর জজ কোর্টের আইনজীবী হুমায়ুন কবির মুন্সি ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে এজিপির দায়িত্ব পান। তিনি শরীয়তপুর জজ কোর্ট ও সদর উপজেলার চিকন্দি কোর্টের দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব পালনের সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন দেওয়ানি মামলা পরিচালনা করতেন। ওই সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০২০ সালে দুদক থেকে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক। এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। দুদক থেকে হুমায়ুন কবির মুন্সিকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করার নিদের্শ দেওয়া হয়। হুমায়ুন কবির মুন্সির দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৩৯ লাখ ৮৪ হাজার ৭৮৫ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করেন। এছাড়া, তার ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬০ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার তথ্য প্রমাণ পায় দুদক।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুদকের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান শরীয়তপুর জজ কোটে হুমায়ুন কবির মুন্সির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
শরীয়তপুর জজ কোর্টে দুদকের আইনজীবী রাসেদুল হাসান মাসুম বলেন, আদালতে দুদকের একটি মামলা দাখিল করা হয়েছে। আগামী রোববার এই মামলাটির বিষয়ে আদালতের আদেশ থাকতে পারে। কারণ মামলাটি আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
শরীয়তপুর জজ কোর্টের এজিপি হুমায়ুন কবির মুন্সি বলেন, দুদক আমার সম্পদের অনুসন্ধান করেছে। আমি যে সম্পদ বিবরণী জমা দিয়েছি তার বাইরেও কিছু সম্পদের তথ্য দুদক পেয়েছে। আমার কাছে আইনি ব্যাখ্যা রয়েছে।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, হুমায়ুন কবির মুন্সির সম্পদ বিবরণীতে বর্ণিত ও প্রদর্শিত তার সব আয়ের উৎস পর্যালোচনা করা হয়েছে। রেকর্ডপত্রে দেখা যায়, তিনি অধিকাংশ সম্পদ এজিপি থাকাকালীন সময় অর্জন করেছেন। যা অভিযোগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখায় তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন এবং স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ গোপন করায় তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দুটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাইফুল/মাসুদ