আদিবাসী নারী ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
বান্দরবান প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
খাগড়াছড়ির রামগড়ে এক আদিবাসী নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি এক নারী ও রাঙ্গামাটি বনরূপায় এক নারী শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টাকারীদের দ্রুত সময়ে দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানিয়ে বান্দরবানে গণ-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সম্মিলিত আদিবাসী ছাত্র সমাজ।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজার মাঠে সম্মিলিত আদিবাসী ছাত্র সমাজ ব্যানারে গণ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে রাজার মাঠ থেকে বের হয় বিক্ষোভ মিছিল।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, খাগড়াছড়ির রামগড়ে এক আদিবাসী নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণকারী গ্রেপ্তারকৃত মো. ইউসুফ, রানা, মোশারফ ও রাঙামাটি বনরূপায় এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টাকারী গ্রেপ্তারকৃত মো. হাবিবুর রহমান ও বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়িতে এক আদিবাসী নারীকে ধর্ষণ চেষ্টাকারী মো. ফারুককে দ্রুততম সময়ে দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় সমাবেশ থেকে ১৩টি দাবি জানানো হয়-
দাবিগুলো হলো-
১. খাগড়াছড়ির রামগড়ে এক আদিবাসী নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, রাঙামাটি বনরূপায় এক আদিবাসী নারী শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা ও বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়িতে এক আদিবাসী নারীকে ধর্ষণ চেষ্টাকারীদের দ্রুত সময়ে দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে আদিবাসী, বাঙালি নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।
৩. আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে এবং এনসিটিবির পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসীদের সঠিক ইতিহাস, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৪. সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে হারিয়ে যেতে বসা আদিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫. পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি সমস্যা সমাধান পূর্বক স্থানীয় অধিবাসীদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৬. পার্বত্য চট্টগ্রামে মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষাখাতে বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে।
৭. পর্যটনের নামে ভূমি বেদখল বন্ধ করতে হবে এবং স্থানীয় জনগণের হাতে কমিউনিটি বেইজড ট্যুরিজম ব্যবস্থা গড়ে তোলার দায়িত্ব দিতে হবে।
৮. বান্দরবানে পাহাড়ি-বাঙলি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী, অঙ্কিত গ্রাফিটি বিনষ্টকারী এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৯. আটককৃত নিরীহ বমদের নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে, সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে বনে জঙ্গলে পালিয়ে থাকা বম জনগোষ্ঠীদের নিজ নিজ এলাকায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং দ্রুত তম সময়ে কেএনএফ সমস্যার সমাধান করতে হবে।
১০. দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি মুক্ত, নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তি ছাত্র-জনতার সাথে জন-সংযোগ ভালো এমন স্থানীয় অধিবাসী ব্যক্তিদের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নিয়োগ দিতে হবে।
১১. পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষয়ে বিভ্রান্তিকর, বিভিন্ন সময়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদানকারী এরূপ ব্যক্তিকে জেলা পরিষদে নিয়োগ করা যাবে না।
১২. পাহাড়ে সঠিক সংবাদ প্রচারণার জন্য সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা দিতে হবে এবং গ্রাফিটি অঙ্কনে বাধা দেওয়া ও গ্রাফিটি মুছে ফেলা বা নষ্ট করা বন্ধ করতে হবে।
১৩. জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
চাইমং/ইমন