কুড়িগ্রামে আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী আশিকের দাফন সম্পন্ন
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আজিকের জানাজায় অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় নিহত কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার আশিক বাবুর (২৪) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বুড়া-বুড়ি ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে, আশিকের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে পুরো পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আশিক সাতভিটা গ্রামের কৃষক চাঁদ মিয়ার ছেলে আশিক। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন আশিক।
এদিকে, নিহত আশিকের স্মৃতি ধরে রাখতে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন দিনের শোকসহ স্মৃতিফলক স্থাপনের কথা জানিয়েছেন উলিপুর উপজেলার পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ অজয় কুমার সরকার।
আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত আশিকের মৃত্যু
স্থানীয়রা পরিবার জানান, গত ৪ আগস্ট কুড়িগ্রাম জেলা শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আশিক তার ছোট ভাই আতিকুর রহমানকে নিয়ে যোগ দেন। এসময় সংঘর্ষে আহত হন দুই ভাই। পরে তাদের কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছোট ভাই আতিকুর সুস্থ হয়ে উঠলেও মাখায় গুরুত্বর আঘাত লাগায় আশিককে নেওয়া হয় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসার পর তাকে রেফার্ড করা হয় ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। গতকাল রোবাবর দুপুরে মারা যান আশিক।
আশিকের মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে যান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা। গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আশিকের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ সকাল ৯টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলা শহরে আশিকের মরদেহবাহী গাড়ি পৌঁছায়। জেলা শহরের শহিদ মিনার এলাকায় তার জানাজার আয়োজন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা সমন্বয়করা। পরে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজ ও নিজ বাড়ির পাশের স্কুল মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে আশিককে দাফন করা হয়।
সাতভিটা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস ছালাম বলেন, ‘আশিক খুব ভালো ছেলে ছিল। আমরা তার হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করছি।’
নিহত আশিকের বাবা মো. চাঁদ মিয়া বলেন, ‘আমার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। কোটা বিরোধী আন্দোলনে দুই ছেলে যোগ দিয়ে আহত হয়। ছোট ছেলে সুস্থ হলেও বড় ছেলে মারা গেছে। আমার আশা ভরসা সব শেষ। আমি কার কাছে বিচার চাবো।’
এদিকে, নিহত আশিকের স্মৃতি ধরে রাখতে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ দিনের শোকসহ স্মৃতিফলক স্থাপনের কথা জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ অজয় কুমার সরকার বলেন, ‘পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র আশিকের মরদেহ কুড়িগ্রামে পৌঁছানোর পর প্রথমে শহিদ মিনার ও পরে পাঁচপীর কলেজ মাঠে জানাজা পড়ানো হয়। সর্বশেষ তার গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। আমরা কলেজ থেকে আশিকের মৃত্যুতে ৩ দিনের শোক ঘোষণা করেছি। পাশাপাশি আশিকের স্মৃতি ধরে রাখতে স্মৃতি ফলক তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
বাদশাহ/মাসুদ