ঢাকা     বুধবার   ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ১ ১৪৩১

অনুমতি সাততলার হলেও চলছে আটতলার নির্মাণ, নির্বিকার পৌরসভা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
অনুমতি সাততলার হলেও চলছে আটতলার নির্মাণ, নির্বিকার পৌরসভা

মানিকগঞ্জ শহরের গঙ্গাধরপট্টির খালপাড় এলাকায় আশিক রহমান শাহিন নামে একজনের বিরুদ্ধে ইমারত আইন না মেনে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। 

অভিযোগ, আশিক রহমান শাহিন সাততলা ভবনের অনুমতি পেলেও আট তলার নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। এতে ওই ভবনের আশেপাশে বসবাসকারীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। ওই নির্মানাধীন ভবনের পাশের বাসিন্দা সেলিনা আক্তার নামে এক ভুক্তভোগী আটতলার নির্মান কাজ বন্ধে পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের পর পৌরসভার প্রকৌশলী বিভাগ নির্মানাধীন ভবন পরিদর্শন করলেও কাজ বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। 
 
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে আশিক রহমান শাহিন সাততলা আবাসিক ভবন নির্মাণের অনুমতি চেয়ে পৌরসভায় আবেদন করেন। মার্চ মাসে মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম ১৬ টি শর্ত দিয়ে সাততলা ভবন নির্মাণের অনুমতি দেন। তবে সম্প্রতি সাততলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করে আটতলার কাজ শুরু করেন ভবন মালিক। বিল্ডিং কোড অমান্য করে আটতলা নির্মানের কাজ বন্ধের দাবিতে গত ২১ আগষ্ট পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ দেন প্রতিবেশি সেলিনা আক্তার।

সেলিনা আক্তার বলেন, প্রথমদিকে শুনেছিলাম ভবনটি পাঁচতলার উপরে অনুমোদন পাবেনা। পরে জানতে পারি ভবনটি সাততলার অনুমোদন পেয়েছে। সাততলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণে আমাদের কোনো আপত্তি ছিলোনা। কিন্তু সাততলার অনুমোদন পাওয়ার পরেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আটতলার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ভবনটির আটতলার নির্মাণ সম্পন্ন হলে আশেপাশের ভবনগুলো ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এছাড়া অগ্নিদুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস সীমাবদ্ধতায় পড়বে। আশেপাশে ফ্ল্যাটের পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাব হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, তারা বিল্ডিং কোড পুরোপুরি অমান্য করে এ ভবনটি নির্মাণ করছে। লিখিত অভিযোগের পর পৌরসভা থেকে একটি টিম পরিদর্শন করে গেছেন। তারাও দেখে নিশ্চিত হয়েছেন সাততলার জায়গায় আটতলার নির্মাণ কাজ চলছে। তারপরও ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়নি। কি কারণে পৌরসভার পরিদর্শন টিম দেখে যাওয়ার পরও নির্মাণ বন্ধ হয়নি সেটি তারাই ভালো বলতে পারবেন।

নির্মানাধীন ওই ভবনের পাশের একাধিক বাসিন্দা জানান, ভবন মালিক একজন প্রবাসী। তার ভাগ্নে ভবন নির্মাণের সবকিছু তদারকি করছেন। ভাগ্নেকে ভবনের বিষয়ে কেউ কিছু বললে পাত্তা দেয়না। লিখিত অভিযোগের পরও প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে তার ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটলো।

এ বিষয়ে ভাগ্নর হাসান মোহাম্মদ মুক্তাসির আলম খানের (রাসেল) মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি৷ পরে ওই নির্মাণাধীন ভবন এলাকায় গেলেও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। 

বিষয়টি জানতে কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী গত ২৯ আগস্ট ( বৃহস্পতিবার) পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিনের কার্যালয়ে যান। নির্বাহী প্রকৌশলী সকল নথিপত্র দেখে বিকেলে বক্তব্য দিবেন বলে জানান। পরে বিকেলে কয়েক দফা মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বক্তব্য দিবেন বলে নিশ্চিত করেন। পরে রোববার দুপুরের দিকে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে পরে বক্তব্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ওই ভবনের অনিয়মের বিষয়ে পৌরসভা থেকে পরিদর্শন করা হয়েছে। নথিপত্র দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেরিতে ব্যবস্থা নিতে নিতে ভবনটির আটতলা নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যেতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

চন্দন/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়