ঢাকা     সোমবার   ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১ ১৪৩১

লক্ষ্মীপুরে কমছে বন্যার পানি, কমেনি বানভাসিদের দুর্ভোগ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৬, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ০৮:৩১, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে কমছে বন্যার পানি, কমেনি বানভাসিদের দুর্ভোগ

লক্ষ্মীপুরে গত তিন দিন ধরে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করায় কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। এলাকা ভেদে গত তিন দিনে এক থেকে দেড় ফুট পানি কমায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে বানভাসিদের মধ্যে।

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার অভ্যন্তরীণ অধিকাংশ সড়কের পানি নেমে গেলেও এখনও কিছু কিছু সড়কে রয়েছে হাঁটু পরিমাণ পানি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসিন্দারা। এখনও পানিবন্দি রয়েছেন জেলার কমপক্ষে ৫ লাখের বেশি মানুষ। এতে করে বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলছে। বসতঘর থেকে পানি নামতে শুরু করায় অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ফিরেছেন নিজ বাড়িতে। তবে সুপেয় পানি ও পয়নিষ্কাশনসহ রান্নার কাজ নিয়ে রয়েছেন বিপাকে।

গত ২০ দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থা থাকায় পানিবাহিত রোগবালাই দেখা দিয়েছে এসব দুর্গত এলাকায়। তাছাড়া সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এখনও কিছু কিছু এলাকায় হাঁটু পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের। বন্যা দুর্গত বিভিন্ন এলাকায় এখন দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়।

এদিকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ৩নং ওয়ার্ডের মধ্যবাঞ্ছানগর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার অভিযোগ, এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে ঠিক মতো নামতে পারছে না উজান থেকে নেমে আসা পানি। গত ২০ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। তাছাড়া দীর্ঘদিন পানিবন্দি থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি, মারা গেছে গবাদি পশুসহ হাঁস মুরগি। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। 

এদিকে বানভাসিদের স্বাস্থ্য সেবা দিতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৪১৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৬৪টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

বন্যায় কৃষি, মৎস্য এবং প্রাণী সম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর হিসেবে মতে, এখন পর্যন্ত কৃষিখাতে ক্ষতি ২২৭ কোটি টাকা। প্রাণী সম্পদ খাতে ৮ কোটি ৬৫ লাখ এবং মৎস্য খাতে ২৪০ কোটি টাকা। এতে পথে বসায় উপক্রম হয়েছে কৃষক, মৎস্য চাষি ও খামারিদের। এমন বাস্তবতায় সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বানভাসিরা। 

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান রাইজিংবিডিকে বলেন, রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় এলাকা ভেদে প্রায় আড়াই থেকে তিন ফুট পানি কমেছে। তবে জায়গায় জায়গায় বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সদর উপজেলার পানি সেভাবে নামতে পারছে না। পানি যাতে নির্বিঘ্নে নেমে যেতে পারে সেজন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু করেছেন তারা।

জাহাঙ্গীর/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়