ঢাকা     সোমবার   ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১ ১৪৩১

পাঠাগার আছে, বই নেই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৪, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১২:১৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
পাঠাগার আছে, বই নেই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঠাগারের একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের ৩ বছর কেটে গেলেও পড়ার জন্য কোনো বই কেনা হয়নি। ফলে পাঠাগারের জন্য নির্মিত ঘরটি ফাঁকা পড়ে আছে নির্মাণের পর থেকেই। পাঠাগারটিতে বই না থাকায় নিয়মিত খোলা হয় না। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বছরের পর বছর অবৈধ স্থাপনায় দখলে ছিল উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুর মোড়ের কিছু অংশ। উপজেলা প্রশাসন অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে এবং স্থানীয় শিক্ষার্থীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ‘পাবলিক লাইব্রেরী’ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় পাঠাগারের জন্য ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৬ লাখ ১৮ হাজার ৪৩৭ টাকা। এই টাকা দিয়ে একটি ঘর নির্মাণ, পলেস্তারা, রং এবং দরজা-জানালা সব কিছুই করা হয়। আনুষ্ঠানিক পাঠাগার উদ্বোধন করেন গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আসজাদুর রহমান (মান্নু)। এতকিছু করার পরেও বই কেনার জন্য কোনো বরাদ্দই ছিলো না পাঠাগারটিতে। 

স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকরা বলছেন, পাঠাগারের ঘরটি দীর্ঘদিন ধরে পরে আছে। সরকারের তরফ থেকে ঘরটি নির্মাণ করা হলেও বই নেই এখানে। যার কারণে নিয়মিত খোলা হয় না। বছরে বেশ কয়েকবার শিক্ষার্থীরা উদ্যোগ নিয়ে ঘরের তালা খুললেও পড়ার জন্য তাদের আনতে হয় বই। পাঠাগারটি বই রাখা হলে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়তে আসবে। দৈনিক পত্রিকাগুলো এখানে রাখা হলে অনেকেই আসবে খবরাখবর জানতে। কিন্তু এসবের কিছুই নেই। 

নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. মাহিনুর রহমান মাহিন বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে পাঠাগারটির ঘর প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু এখানে কোনো বই নেই। যার কারণে পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা হয় না। পাঠাগারটি এখন ঢেলে সাজানোর সময়। বই জোগানের পাশাপাশি পাঠাগারটি নিয়মিত খোলার জন্য একজন মানুষ প্রয়োজন। যাতে করে নিয়মিত পাঠাগারটি খোলা হয়। এতে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা এখানে পড়া লেখা করতে পারেন। 

স্থানীয় আসাদুজ্জামান নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, পাঠাগারের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।  নির্মাণের কয়েক বছর পার হয়ে গেলেও এখানে কোনো বই নেই। নিয়মিত খোলা হয় না। স্থানীয়রা উদ্যোগ নিয়ে মাঝে-মধ্যে ঘরটি খোলেন। এ বিষয়টিতে নজর দেওয়া প্রয়োজন কর্তৃপক্ষের। 

পাঠাগার নির্মাণ কমিটির সভাপতি ও গোবরতলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইউসুফ আলী বলেন, স্থানীয় শিক্ষার্থীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পাবলিক লাইব্রেরী নির্মাণ করা হয়। ঘরটি নির্মাণের জন্য ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও বই কেনার জন্য কোনো বরাদ্দ ছিলো না। তারপরেও বাড়িতে আমার ব্যক্তিগত কিছু বই ছিলো সেগুলো এখানে রেখেছি পড়ার জন্য। পাঠাগারের ঘরটি খোলার জন্য লোকবল দরকার, সেটিও নেই। ফলে পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা হয় না। 

গোবরতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম টিপু বলেন, পাঠাগারটি মাঝে-মধ্যে খোলা হয়। একেবারে যে বন্ধ থাকে তা নয়। এখানে বই থাকলে মানুষজন পড়তে আসত। বই নাই, পাঠাগারটি খোলার জন্য লোক নাই। এসব জোগান দেওয়া গেলে পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা যেতো। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাছমিনা খাতুন বলেন, খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে; শিগগির সেখানে বইয়ের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে সেখানকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারে।

শিয়াম/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়