ঢাকা     বুধবার   ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৭ ১৪৩১

বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৮:০২, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

নাফ নদী। ফাইল ফটো

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির চলমান সংঘাত দিন দিন তীব্র হচ্ছে। এর জেরে মিয়ানমারে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন বলে জানা গেছে। বিজিবি বলছে, সীমান্তে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা প্রতিহত করা হচ্ছে।

এদিকে, মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে একের পর এক বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের বাসিন্দারা। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা থেকে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫টা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান সীমান্তের বাসিন্দারা। ফলে তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট এলাকার জয়নাল উদ্দিন বলেন, ‘শনিবার রাত থেকে বিস্ফোরণের শব্দে ঘুমাতে পারিনি। শুধু আমরা নয়, ভয়ে নির্ঘুম রাত কেটেছে অনেকেরই।’ 

আরো পড়ুন:

এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা জানিয়েছেন, মিয়ানমারে সংঘর্ষের কারণে শত শত রোহিঙ্গা মারা যাচ্ছে। অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। কিছু রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে এদেশে চলেও এসেছেন। কতোজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তারা। 

রোহিঙ্গা নেতারা জানান, রাখাইন রাজ্যে যেখানে (মংডুতে) হামলা হচ্ছে, সেখানে অধিকাংশ রোহিঙ্গার বসবাস। তারা নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের খবর এসেছে। নতুন করে কয়েকটি রোহিঙ্গা পরিবার বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ব্যাপারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত রয়েছেন। এছাড়া, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।’

টেকনাফে আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার মাইন উদ্দিন বলেন, ‘কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঢুকে পড়েছে। ক্যাম্পে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। অনুপ্রবেশের সময় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে নাফ নদী থেকে পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে।’

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, ‘আগস্ট মাসের ৫ তারিখের আগে পরে বাংলাদেশের সরকার পতন পরিস্থিতিতে ৮ হাজার মতো রোহিঙ্গা অনুপ্রেবশ করেছে। এটা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বলেছে। এর পরেও কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের তথ্য পাওয়া গেলেও তার সঠিক পরিসংখ্যা পাওয়া যায়নি।’

টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমান্তে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা আমরা প্রতিহত করছি। সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকানার পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।

তারেকুর/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়