ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২ ১৪৩১

নোয়াখালীতে এখনও ১৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি 

মাওলা সুজন, নোয়াখালী  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ০৯:৪৪, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নোয়াখালীতে এখনও ১৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি 

বিভিন্ন স্থানে এখনও জলাবদ্ধতার কারণে ভোগান্তিতে রয়েছেন জনগণ

নোয়াখালীতে বন্যার পানি ধীর গতিতে নামছে। জেলায় এখনও প্রায় ১৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ৬০০ আশ্রয়কেন্দ্রে ৮০ হাজার মানুষ অবস্থান করছেন। জলাবদ্ধতার কারণে নিম্নাঞ্চল ও শহরতলীর মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।  

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দ্রুত পানি নিষ্কাশানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে জনসাধারণ বলছে, তাদের দুর্ভোগ নিরসনে কার্যকর কোনো উদ্যোগ এখনও তারা দেখছেন না।

নোয়াখালী জেলা নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব জামাল হোসেন বলেন, জেলা শহরে বুক চিরে বয়ে যাওয়া নোয়াখালী খালসহ বিভিন্ন খাল যথাযথ সংস্কার না হওয়া, খালের ওপর কিংবা খালের পাশ ঘেঁষে নির্মিত বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনার ফলে জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিনের সমস্যা। নোয়াখালী পৌর শহরে সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো নির্মিত হলেও পরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। উপরন্তু সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও পৌরসভার মধ্যে জলবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সমন্বয়হীনতা রয়েছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজনের) এর জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের বলেন, আমাদের নোয়াখালী ভৌগলিকভাবে নীচু। প্রতি বছর বর্ষায় জেলাতে এমনিতেই জলাবদ্ধতা হয়। এবছর নোয়াখালীর ইতিহাসের স্মরণকালের বন্যা হয়। ফলে এখন অনেকটা স্থায়ী জলাবদ্ধতার রূপ ধারণ করেছে। কারণ হচ্ছে ধারাবাহিক দখল ও বহুতল ভবন নির্মাণ করে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করা। প্রভাবশালী মহল শহরের ছাগলমারা খালের অনেক অংশ দখল করে অট্রালিকা করেছে। এখন সময় এসেছে এসব দখলদারিত্বের অবসান করতে হবে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করে দখল মুক্ত করে পানি নিষ্কাশনের পথ প্রসারিত করবে, এমটাই প্রত্যাশা জেলাবাসীর। দখলের যে সংস্কৃতি রয়েছে তার অবসান করতে হবে।

ইমাম উদ্দিন নামে একজন বলেন, যে যেভাবে পারছে দখল করে ভবন করেছে। কোনো নীতিমালার তোয়াক্কা করছে না। মালিকানার নির্দিষ্ট জায়গায় বাহিরেও মানুষ আশপাশের নালা দখল করে রেখেছে। ফলে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ রয়েছে। এগুলো অপসারণ করার জন্য প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

অহিদ উদ্দিন নামে আরেকজন বলেন, নোয়াখালী প্রতি বছরই জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে। এবারের বন্যায় তা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। সময় হয়েছে নতুন করে ভাববার। সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। নোয়াখালী শহরের যেসব অবৈধ স্থাপনা রয়েছে সেগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করতে হবে। বর্ষায় যে সব পথ দিয়ে পানি নামে সেগুলো সংষ্কার করতে হবে। 

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, নোয়াখালীতে পানি প্রবাহের যে পথগুলো বন্ধ রয়েছে সেগুলো ইতিমধ্যে সচল করা হয়েছে। যেগুলো এখনও সচল হয়নি সেগুলোর কাজ চলছে। বিভিন্ন বাঁধ কাটা হয়েছে। ড্রেন-নালা পরিষ্কার করা হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই জলাবদ্ধতার অবসান হবে।

/ইভা/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়