ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৮ ১৪৩১

স্ত্রীর ওপর অভিমান করে ছেড়েছিলেন বাড়ি, ফিরলেন ৩২ বছর পর

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৮, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৭:২০, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
স্ত্রীর ওপর অভিমান করে ছেড়েছিলেন বাড়ি, ফিরলেন ৩২ বছর পর

স্ত্রীর ওপর অভিযান করে বাড়ি ছাড়া মুর্শিদ মিয়াকে পুলিশের সহায়তায় বাড়ি ফিরেয়ে নেন স্বজনরা

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার দক্ষিণ চরটেকী গ্রামের মুর্শিদ মিয়া। বর্তমান বয়স ৭০ বছর। স্ত্রীর ওপর অভিমান করে ৩২ বছর ছিলেন বাড়ি ছাড়া। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে তাকে খুঁজে পেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। পুলিশের সহায়তায় গত রোববার তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন স্বজনরা। পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

জানা গেছে, নরসিংদীর বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামের সাহাজ উদ্দিন মাস্টারের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ করতেন মুর্শিদ মিয়া। কিছুদিন আগে কাজ করে জমানো সাড়ে চার লাখ টাকা পাশের গ্রামের একটি মসজিদে দান করেন তিনি। সে সময় তাকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুর্শিদ মিয়াকে নিয়ে পোস্ট করতে শুরু করেন। গত রোববার মুর্শিদ মিয়ার ভাতিজা আবদুল হাকিমসহ কয়েকজন গিয়ে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন।

পাকুন্দিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমার বাড়ি নরসিংদীর বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামে। সেখানকার স্থানীয় একজন ফেসবুকে মুর্শিদ মিয়াকে নিয়ে পোস্ট করেন। তখনই বিষয়টি আমার চোখে পড়ে। ফেসবুক পোস্টে জানতে পারি, মুর্শিদ মিয়া কয়েক মাস ধরে অসুস্থ। তার বাড়ি যাওয়ার প্রবল ইচ্ছে জেগেছে। তখন এলাকায় কথা বলে জানতে পারি, তার বাড়ি পাকুন্দিয়া উপজেলায়। তখনই আমি তার বিষয়ে খোঁজ নিতে শুরু করি। পরবর্তীতে ফেসবুকের কল্যাণেই মুর্শিদ মিয়ার স্বজনরা তাকে চিনতে পারেন।’

আরো পড়ুন:

তিনি আরও বলেন, ‘স্বজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, প্রায় ৩২ বছর আগে বউয়ের সঙ্গে পারিবারিক বিষয়ে অভিমান করেন মুর্শিদ মিয়া। এরপর বাড়ি ছাড়েন তিনি। বাড়ির লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো খোঁজ পায়নি। একপর্যায়ে বাড়ির লোকজন তাকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেন। কোনো সন্তান না থাকায় মুর্শিদ মিয়ার স্ত্রীও আশাহত হয়ে চলে যান। তবে, মুর্শিদ মিয়ার অনেক জমিজমা আছে। তার ভাগের সহায়-সম্পত্তি যেন তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, সে বিষয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি।’

মুর্শিদ মিয়ার ভাতিজা আবদুল হাকিম বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর চাচাকে ফিরে পেয়ে আমাদের পরিবারের সবাই আনন্দিত। চাচার স্ত্রী-সন্তান কেউ নেই। তবে, তার অনেক জমি রয়েছে। যা আমার বড় চাচা ভোগ করছেন। মুর্শিদ চাচা যাতে জীবনের শেষ সময়টা ভালো করে কাটাতে পারেন আমরা সেই চেষ্টা করছি।’

ওসি আসাদুজ্জামান জানান, সম্প্রতি ফেসবুকের কল্যাণে মুর্শিদ মিয়ার খোঁজ পান স্বজনরা। আমরা তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে সার্বিক সহযোগিতা করি। 

রুমন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়