ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও তার স্ত্রী প্রফেসর ফাহিমা খাতুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও তার স্ত্রী মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুনসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১৯৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে কাউসার আহম্মেদ হত্যার ঘটনায় তার চাচা আকরাম হোসেন আদনান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০২১ সালের ২৭ মার্চ বিকেলে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বিসিক শিল্পনগরীর সামনের রাস্তায় (কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক) সংঘর্ষের সময় কাউসার আহম্মেদ নিহত হন।
নিহত কাউসার আহম্মেদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বুধল পশ্চিমপাড়া গ্রামের আলী আহম্মেদের ছেলে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ ভূইয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আলম তারা দুলি, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মহসিন মোল্লা, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল আলম, নারী ভাইস-চেয়ারম্যান ফাতিমা আফরিন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সামি আহমেদ নাবিল, সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুরে মাওলা ফারানি, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর মৃর্ধা, বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান, যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাউসার ভূঁইয়া, বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুব হোসাইন, ইলিয়াস সরকার, ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান শান্তু, ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমদান সাগর ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রাজভী, পাহাড়পুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুনায়েম খা, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফয়জুন নাহার টুনি, ইছাপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর মিনারা বেগম, পৌর কাউন্সিলর জীবন মিয়া, যুবলীগ নেতা গোলাম মোস্তফা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আল ফয়সাল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিন মিয়া, শহর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ রনি, সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহআলম, মাছিহাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল আমিন পাভেল, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ ভূইয়া, যুবলীগ নেতা বরকত উল্লাহ সাগর, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিমন আল স্বাধীন প্রমুখ।
মামলায় বাদী আকরাম হোসেন আদনান অভিযোগ করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে আন্দোলন কর্মসূচির সময় জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলে কাউসার আহম্মেদ অংশ নেন। ২০২১ সালের ২৭ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বিসিক রাস্তার সামনে সামনে গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নির্দেশে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ হয়। সেসময় গুলি নাভিতে লেগে গুরুত্বর আহত হন কাউসার। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান তিনি। সে সময় পুলিশ ও প্রশাসনের অসহযোগিতা এবং দমন-নিপীড়নের ভয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মাইনুদ্দীন/মাসুদ