ঢাকা     শুক্রবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১২ ১৪৩১

ভুলুয়া নদীর অবৈধ বাঁধ অপসারণে কার্যক্রম শুরু

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১২, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
ভুলুয়া নদীর অবৈধ বাঁধ অপসারণে কার্যক্রম শুরু

লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলা দিয়ে প্রবাহিত ভুলুয়া নদীতে থাকা অবৈধ বাঁধ অপসারণে হাইকোর্টের নির্দেশনায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নদীটির কমলনগর উপজেলা অংশে অবৈধ বাঁধ নিয়ে টানা দুইদিন তদন্ত করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, আজ দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা আবদুস সাত্তার পালোয়ান হাইকোর্টের আদেশপত্র জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করেছেন। হাইকোর্টের আদেশের আলোকে ভুলুয়া নদীসহ লক্ষ্মীপুরের সব খাল অবৈধ দখল চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করতে লিখিত আবেদন করেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী অবৈধ দখল উৎখাত করে খাল সমূহের পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবি উল্লেখ করা হয়। 

গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সাত্তার পালোয়ান মানবসৃষ্ট বন্যা রোধে ভুলুয়া নদীসহ লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর সকল খাল থেকে অবৈধ বাঁধ অপসারণ চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর ভুলুয়া নদীসহ সব খাল দখলে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ভুলুয়া নদীতে অবৈধ দখলের ঘটনা তদন্ত ও অবৈধ বাঁধ অপসরণে সময় বেধে আদেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবৈধ দখলের ঘটনায় তদন্ত শুরু করতে হবে। তদন্তপূর্বক ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে দখল উচ্ছেদ করে ভুলুয়া নদীর পানি প্রবাহ নিশ্চিত করে হাইকোর্টকে প্রতিবেদন দিতে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

অ্যাডভোকেট সাত্তার পালোয়ান বলেন, ৪৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে ভুলুয়া এলাকায় প্রায় ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বন্যার পানি কমবে কি না তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এজন্য প্রথমেই ভুলুয়া নদী থেকে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্ত শেষে নদী থেকে অবৈধ বাঁধ অপসারণের জন্য ১০ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, আমি হাইকোর্টের আদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসককে হস্তান্তর করেছি। পত্রপত্রিকায় সংবাদ দেখে ইতোমধ্যে তিনি অবৈধ বাঁধ চিহ্নিতে তদন্ত শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন। প্রশাসন শতভাগ কাজ করবে বলে জানিয়েছেন। তবে, এতে তারা জনসম্পৃক্ততা চেয়েছেন। মানবসৃষ্ট বন্যা থেকে মুক্তি পেতে সব খালের বাজারের অংশ প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে। সেই দখলদারদের জরিমানার আওতায় আনা হোক। অবৈধ স্থাপনাগুলো ভাঙা হোক। যেভাবেই হোক খালগুলো দখলমুক্ত করতে হবে। 

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান বলেন, ভুলুয়া নদী থেকে অবৈধ বাঁধ অপসারণে হাইকোর্টের নির্দেশনা হাতে পেয়েছি। এর আগে, পত্রপত্রিকার মাধ্যমে নিদের্শনার বিষয়টি জানতে পেরে আমরা কাজ শুরু করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সার্ভেয়াররা টিম নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’ 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার মধ্য দিয়ে মেঘনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ভুলুয়া নদীর লক্ষ্মীপুর অংশের দৈর্ঘ্য ৭৬ কিলোমিটার। জলাধারটি আগে গড়ে ৩০০ মিটার চওড়া হলেও এখন কমে গড়ে ১০০ মিটার হয়ে গেছে।

জাহাঙ্গীর/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়