অর্থাভাবে ওষুধ কিনতে পারছেন না আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সিফায়েত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শিক্ষার্থী সিফায়েত চৌধুরী (২৫)।

গত ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ সিফায়েতকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছিল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সেখানে চিকিৎসার পর তাকে নেওয়া হয় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। এরপর কিছুটা সুস্থ হলে ৩০ আগস্ট ছাড়পত্র নিয়ে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের চাপাইলে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন।

আসাদ চৌধুরী ও মর্জিনা বেগমের চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট সিফায়েত। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে অনেক আগে। দুই ভাই মসজিদে ইমামতি করে কোনো মতে সংসার চালান। ভাইদের সহযোগিতা ও টিউশনি করেই ডিগ্রি পাশ করেছেন সিফায়েত। 

গত ১৫ জুলাই ঢাকায় গিয়েছিলেন বড় বোনের বাসায়। উদ্দেশ্য ছিল মাস্টার্সে ভর্তি হওয়া ও চাকরির চেষ্টা করা। ৫ আগস্ট নবীনগরে আন্দোলনে গিয়েছিলেন সিফায়েতসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী। আন্দোলনে পুলিশের ছররা গুলি তার গায়ে লাগে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। 

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিফায়েতের বড় ভাই রুবেল চৌধুরী বলেন, ‘৫ আগস্ট হঠাৎ একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, আন্দোলন গিয়ে সিফায়েত মারা গেছে। এই খবর শুনে দ্রুত ঢাকায় চলে যাই। সিফায়েতের পাঁচটি গুলি লেগেছিল। অপারেশন করে তা বের করা হয়। প্রথমদিকে দামি ওষুধপত্র অধিকাংশই নিজেদের কিনতে হয়েছে। বর্তমানে টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারছি না। সুস্থ হতে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের আর্থিক সমস্যার কারণে চিকিৎসা করাতে পারছি না ভাইকে। সরকারের কাছে আমরা উন্নত চিকিৎসার দাবি জানাই।’

সিফায়েতের চাচা ইউনুস চৌধুরী বলেন, ‘এরা আর্থিকভাবে খুবই অস্বচ্ছল। দুই ভাই ইমামতি করে চার হাজার টাকা করে বেতন পায়। তাই দিয়েই সংসার চলে। সিফায়েতের গুলি লাগার খবর পাওয়ার পর ঢাকা যাওয়ার টাকাও আমরা সবাই মিলে জোগাড় করে দিয়েছি।’

পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ‘সিফায়েত আমার এলাকার খুব ভালো ছেলে। আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় সে। ঢাকায় চিকিৎসা হলেও সে পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। তার আরও চিকিৎসার প্রয়োজন। সবাই মিলে আর্থিক সাহায্য করলে সিফায়েতের উন্নত চিকিৎসা হবে।’