ঢাকা     বুধবার   ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৩ ১৪৩১

বন্যায় বসতভিটা হারিয়ে ব্রিজের ওপর ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন

ফেনী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৪:০৬, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বন্যায় বসতভিটা হারিয়ে ব্রিজের ওপর ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ফেনীর জনপদ। বন্যার পানিতে ডুবে শেষ হয়ে গেছে লাখো মানুষের স্বপ্ন। নিমেষেই মাটিতে মিশে গেছে দীর্ঘদিনের কষ্টে গড়ে তোলা সাজানো বসতভিটা। 

ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ জঙ্গলঘোনা গ্রামে ফখরের নেছা (৫০)। ভয়াবহ বন্যায় তার মাথা গোঁজার একমাত্র অবলম্বন বসতভিটা মাটির সাথে মিশে গেছে। পানির তীব্র স্রোতের সঙ্গে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে একটি ব্রিজের ওপর ঝুপড়ি তৈরি করে স্বামী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। 

জানালেন, সিলোনিয়া নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের পূর্ব পাশে ৮ শতক জমিতে সাজানো বসতভিটায় স্বামী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস ছিলো ফখরের নেছার। স্বামী ননা মিয়া অসুস্থ। পাঁচ মেয়ের মধ্যে চারজনকে বিয়ে দিয়েছেন। তাদের একমাত্র ছেলে ফেনী শহরের একটি হোটেলে কাজ করেন। গত ২০ আগস্ট ঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। এদিন রাতে ঘরের চালা পর্যন্ত পানি উঠে গেলে কোনো মতে মেয়ে ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে সিলোনিয়া ব্রিজের ওপর ওঠে জীবন বাঁচান ফখরের নেছা। তারপর থেকে ব্রিজের ওপর ঝুপড়ি তৈরি করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। 

দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে ফখরের নেছা বলেন, সেদিন রাতে কোনো মতে সিলোনিয়া ব্রিজের ওপর উঠে জীবন বাঁচিয়েছি। ঘরের সব আসবাবপত্র শেষ হয়ে গেছে। ব্রিজের পিলারের কারণে বন্যার স্রোতের সঙ্গে ভেসে যেতে না পেরে কিছু টিন আটকে ছিল। পরের দিন থেকে সেগুলো দিয়ে ব্রিজের ওপর একটি ঝুপড়ি বানিয়ে সেখানে থাকছি। খোলা আকাশের নিচে রান্না করে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। শৌচকার্য করার জায়গা নেই।

তিনি বলেন, এতোদিন ধরে ব্রিজের ওপর ঝুপড়ি ঘরে থাকলেও কোনো সাহায্য পাইনি। এখন কার কাছে যাবো? কোথায় থাকব? আমরা গরিব মানুষ। সরকার বা কেউ সহযোগিতা করলে এ ঘর তৈরি করতে পারবো।

এ ব্যাপারে পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, উপজেলায় বন্যায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে প্রায় এক হাজার আবেদন করেছেন। মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। কোনো ধরনের সহযোগিতা এলে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রদান করা হবে। তবে বিভিন্ন এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পুনর্বাসনে কাজ করছে বলে জানান তিনি। 

সাহাব/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়