ঢাকা     বুধবার   ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৩ ১৪৩১

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার কাছে চাঁদা দাবি, বহিষ্কার হলেন কৃষকদল নেতা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০১, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ২২:১৮, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার কাছে চাঁদা দাবি, বহিষ্কার হলেন কৃষকদল নেতা

রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়ন কৃষক দলের বহিষ্কৃত সহস্য সচিব মো. জসিম চৌধুরী

লক্ষ্মীপুরে হত্যা ও অস্ত্র মামলা থেকে নাম বাদ দিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযুক্ত কৃষকদল নেতা জসিম চৌধুরীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে, এ ঘটনায় তাকে শোকজ করে রায়পুর উপজেলা কৃষক দল। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বামনী ইউনিয়ন কৃষকদলের সদস্য সচিবকে বহিষ্কার করে সংগঠনটি।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রায়পুর উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জাকির হোসেন আরিফ স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে জসিমের বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, চলমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার কারণে বামনী ইউনিয়ন কৃষকদলের সদস্য সচিব মো. জসিম চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এ বহিষ্কারাদেশ অনুমোদন করেছেন।

বহিষ্কার কৃষকদল নেতা জসিমের বাড়ি রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কলাকোপা গ্রামে। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা লিটনের বাড়ি সদর উপজেলার উত্তর হামছাদীর চৌধুরী বাজার এলাকায়।

জানা গেছে, জহির উদ্দিন লিটন নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে মোবাইলফোনে কল করে হত্যা ও অস্ত্র মামলা থেকে নাম বাদ দিতে কৃষকদল নেতা জসিম দুই লাখ টাকা চাঁদা চান। লিটন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক। তাদের দুই জনকের কথোপকথনের রেকর্ডিংটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জসিমকে কারণ দর্শানো (শোকজ) নোটিশ দেয় উপজেলা কৃষক দল। দুই দিনের মধ্যে জসিমকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। জসিম জবাব দিলেও তা সন্তোষজনক না হওয়ায় উপজেলা কৃষক দল তাকে বহিষ্কার করে।

জসিম ও লিটনের কথোপকথনের কয়েকটি অডিও কলরেকর্ডিং প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। এতে লিটনের উদ্দেশ্যে জসিমকে বলতে শোনা যায়, ‘সবুজ ভূঁইয়া বাদী হয়ে হত্যা ও অস্ত্র মামলা জমা দিয়েছে। তবে পুরো ডিলিংস, ব্যাকআপ দেবে লক্ষ্মীপুরের নেতারা। মামলা সাবমিট করা হয়েছে, সকাল পর্যন্ত সময় আছে। ওই মামলায় সালাহ উদ্দিন টিপু ১ নম্বর আসামি, আপনি ২৮ নম্বরে আছেন। টেনশন করিয়েন না। আপনার নাম আমি স্পেশালি বলছি, সে (বাদী) বলছে কম নেই। দুই এর নিচে কম নেই, আড়াই বলছে আমাকে। এটাই শেষ কথা। আর কোনো রাস্তা খোলা পাবেন না।’

রেকর্ডিংটিতে জসিমকে বলতে শোনা যায়, ‘সমস্যাটা হয়ে গেল যে অস্ত্র মামলা টু মার্ডার মামলা। আমি এডার জন্য ভয় পাইগেছি। যদি এই মামলা একবার ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। তাহলে ২, ৪, ১০ ও ১৫ বছরেও কিছু হবে না। আপনি আমার জমি একটু বিক্রি করে দেন, আপনি আমার ভাই। জমি বিক্রির টাকা দিয়ে সারেন। সকাল ৮টা পর্যন্ত সময় আছে।’

কৃষক দল নেতা জসিম চৌধুরী দাবি করেন, অডিওটি এডিট করা। তিনি দলের নেতাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি লিটনের কাছে চাঁদা চাননি। শোকজের চিঠি পেয়ে তিনি জবাবও দিয়েছেন।  

স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জহির উদ্দিন লিটন বলেন, ‘আমি কোন অপকর্ম করিনি। জসিম ফোন করে হত্যা ও অস্ত্র মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার অজুহাত দেখিয়ে আমার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেছে।’  

রায়পুর উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কাউসার মোল্লা বলেন, চাঁদা চাওয়ার ঘটনার অডিও রেকর্ডিং শুনে জসিমকে শোকজ করা হয়। তিনি শোকজের সন্তোষজনক জবাব দেননি। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

জাহাঙ্গীর/মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়