মানিকগঞ্জে স্ত্রীসহ তিনজনের শরীরে আগুন, স্বামী পলাতক
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
দাম্পত্য কলহের জেরে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় হাসান আলী নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে স্ত্রীসহ তিনজনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর অভিযুক্ত হাসান আলী পালিয়ে গেছেন।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯ টার দিকে সাটুরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) উপজেলার গওলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ঢাকার ধামরাই উপজেলার আমতা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের হাসান আলীর স্ত্রী শারমিন আক্তার (৩০), তার চাচি শিরিন আক্তার (৫৫) ও চাচাতো ভাই রুবেল হোসেন (৩২)।
পুলিশ, ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে ধামরাইয়ের রাজাপুর গ্রামের হাসান আলীর সঙ্গে সাটুরিয়া উপজেলার গওলা গ্রামের মৃত আতোয়ার হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তারের বিয়ে হয়। এই দম্পতির আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কয়েক বছর ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ দেখা দেয়। এ নিয়ে হাসান তার স্ত্রী শারমিনকে মারধরও করতেন। দাম্পত্য কলহের জেরে গত সোমবার অভিমান করে ছেলেকে নিয়ে শারমিন গওলা গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে যান।
শুক্রবার সকালে শ্বশুরবাড়িতে যান হাসান আলী। সেখানেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শারমিন পাশের চাচার বাড়িতে যান। সকাল ১০টার দিকে চাচা শ্বশুরের ঘরের ভেতর গিয়ে শারমিনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করেন হাসান। এ সময় চাচি শিরিন ও শারমিনের চাচাতো ভাই রুবেল তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদের শরীরেও কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এতে তাদের তিনজনের শরীরে আগুন ধরে যায়। প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ততক্ষণে তাদের তিনজনের শরীর আগুনে পুড়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে শিরিন ও রুবেলকে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান এবং শারমিনকে জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
শারমিনের মামা মো. বাসু বলেন, বিনা কারণে হাসান তার ভাগনি শারমিনকে প্রায়ই মারধর করতেন। এ নিয়ে সামাজিকভাবে মিমাংসার জন্য একাধিকবার সালিশও হয়েছে। শুক্রবার সকালে তার ভাগনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাসান শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাকে উদ্ধার করতে গেলে ভাগনির চাচি ও চাচাতো ভাইকেও একইভাবে আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত হাসান পলাতক। হাসানের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সাটুরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চন্দন/টিপু