ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৪ ১৪৩১

তিন মাস ধরে মজুরি বন্ধ, কষ্টে আছেন ১৪০০ চা শ্রমিক

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৫, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১২:১৪, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
তিন মাস ধরে মজুরি বন্ধ, কষ্টে আছেন ১৪০০ চা শ্রমিক

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা চা বাগানে প্রায় তিন মাস ধরে শ্রমিকদের মজুরি ও রেশন বন্ধ। কষ্টে দিন কাটছে ১৪শ’ চা শ্রমিক পরিবারের। 

শ্রমিকদের অভিযোগ, দি নিউ সিলেট টি এস্টেটস লিমিটেড এর মালিকানাধীন ওই বাগান কর্তৃপক্ষ নিয়মিত মজুরি না দিয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। মজুরির দাবিতে শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে আসছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জন প্রতিনিধির আশ্বাসে বিশ্বাসি হয়ে পাতা উত্তোলনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।  

তবে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অনেক চেষ্টা করে তারা এক সপ্তাহের মজুরি প্রদান করেছেন।

শ্রমিকরা বলছেন, ১১ সপ্তাহের পর এক সপ্তাহের মজুরি পেয়ে কি হবে। আগের ঋণ পরিশোধ করবো, না সংসার চালাবো। বকেয়াসহ মজুরি না পেয়ে আমাদের অর্ধাহারে থাকতে হচ্ছে।  

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাগান মালিক নানা অজুহাত দেখিয়ে শ্রমিকদের মজুরি বন্ধ রেখেছেন। গুঞ্জন রয়েছে  তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন। আর এরপর থেকে বাগানে অচল অবস্থা বিরাজ করছে। 

পাতা উত্তোলনের ভর মৌসুমে শ্রমিকরা কাজ না করলে উৎপাদনে বড় ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিতে পারে মনে করে স্থানীয় প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।  

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আলাপকালে বাগানের শ্রমিক পরিবারের সুমন ভৌমিক বলেন, ফুলতলা চা বাগান ভালো মানের বাগান। হঠাৎ মালিক পক্ষের অসহযোগিতায় প্রায় তিন মাস ধরে শ্রমিকদের রেশন ও মজুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েছে দিনমজুর শ্রমিকরা।  শ্রমিকরা দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেননি। 

বাগান পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক দিপচান গোয়ালা বলেন, আমাদের বাগানে ১৪শ’ শ্রমিক রয়েছেন। মালিকপক্ষ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও বন্যার অজুহাত দেখিয়ে ১১ সপ্তাহ ধরে রেশন ও মজুরি বন্ধ করে রেখেছেন। এনিয়ে আমরা বার বার যোগাযোগ করলেও কোন সুরাহ হয়নি। আমরা দাবী আদায়ের লক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করি। শ্রমিকদের অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জানানো হলে তারা উদ্যোগ নিয়েও সমাধান করতে পারেননি।  রোববার তাদের প্রচেষ্টায় মাত্র এক সপ্তাহের মজুরি হিসেবে প্রতিজনে ১ হাজার ২০ টাকা পেয়েছেন। কিন্তু রেশন দেওয়া হয়নি। এই টাকা দিয়ে শ্রমিকরা ঋণ পরিশোধ করবেন না সংসারের খরচ চালাবেন। এনিয়ে তারা পড়েছেন বিপাকে। ধারাবাহিকভাবে মজুরি প্রদান না করলে শ্রমিকরা অনাহারে-অর্ধাহারে থাকবে। শ্রমিকরা বাগান রক্ষার স্বার্থে এবং চা পাতা উত্তোলনের ভর মৌসুম থাকায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলী বলেন, বাগানের অবস্থা ভালো না। বিষয়টি স্থানীয় ও উর্ধ্বতন প্রশাসনের জানা রয়েছে। বাগান চালু রাখার জন্য এক সপ্তাহের মজুরি প্রদান করা হয়েছে। বাগান ম্যানেজারকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। 

জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর বলেন, এখানে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিদর্শন করেছেন। শ্রমিকদের এক সপ্তাহের মজুরি প্রদান করা হয়েছে। 

মজুরি প্রদান অব্যাহত থাকবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করবো।

আজিজ/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়