ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৪ ১৪৩১

যুবকের চোখ উৎপাটন: ওসিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৬:৫২, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
যুবকের চোখ উৎপাটন: ওসিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা 

খুলনায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শাহজালাল হাওলাদারের দুই চোখ উৎপাটনের ঘটনায় খালিশপুর থানার সাবেক ওসি নাসিম খানসহ ১২ পুলিশ-আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শাহজালালের মা রেনু বেগম বাদী হয়ে খুলনা মহানগর হাকিম আদালত-২ এ মামলা দায়ের করেন। 

আদালতের বিচারক আল-আমিন মামলা গ্রহণ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মমিনুল ইসলাম। 

মামলার অপর আসামিরা হলেন, এসআই মো. নূর ইসলাম, এসআই তাপষ কুমার পাল, এসআই মো. মোরসেলিম মোল্লা, এসআই মো. মিজানুর রহমান, এসআই সৈয়দ সাহেব আলী, এএসআই রাসেল, কনস্টেবল আল মামুন, আনসার সদস্য মো. আফসার আলী, ল্যান্স নায়েক আবুল হাসেম, আনসার নায়েক রেজাউল হক ও সুমা আক্তার।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই শাহজালাল মহানগরীর নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনির শ্বশুর বাড়ি থেকে রাত ৮টায় মেয়ে শিশুর দুধ কেনার জন্য বাসার পাশে দোকানে যান। এ সময় খালিশপুর থানা পুলিশের ওসি নাসিম খানের নির্দেশে তাকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলে ওসি তাকে ছাড়ানোর জন্য দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। দাবি করা টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তারা শাহজালালকে পুলিশের গাড়িতে করে বাইরে নিয়ে যায়। পর দিন ১৯ জুলাই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার দুটি চোখ উপড়ানো অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা।

শাহজালাল জানান, পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে গাড়িতে করে গোয়ালখালী হয়ে বিশ্ব রোডের (খুলনা বাইপাস সড়ক) নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তার হাত-পা চেপে ধরে এবং মুখের মধ্যে গামছা ঢুকিয়ে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে দুটি চোখ উপড়ে ফেলে। 

এ ঘটনায় শাহজালালের মা রেনু বেগম বাদী হয়ে ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলি আদালতে মামলা করেন। মামলায় দাবিকৃত টাকা না পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা যোগসাজশে তার ছেলে মো. শাহজালালের দুটি চোখ উৎপাটন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। মামলায় খালিশপুর থানার ১১ পুলিশ ও আনসার কর্মকর্তাসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে আসামিরা পুলিশের প্রভাব খাটিয়ে বাদী ও যুবক শাহজালালকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তুলে নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে মামলা ধামাচাপা দেয়।

মামলার বাদী রেনু বেগম বলেন, তার যুবক ছেলের দুটি চোখ উৎপাটন করেছে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। কিন্তু তিনি ন্যায় বিচার পাননি। তিনি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে তার ছেলের চোখের চিকিৎসার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

নুরুজ্জামান/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়