শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট
বরিশাল সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নের ১৮৬ নং সাত্তালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে মুখ থুবড়ে পড়ছে শিক্ষাব্যবস্থা। সহকারী শিক্ষকরা বলছেন, সকল অনিয়মকে পরিণত করতে চাচ্ছেন নিয়মে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী মোল্লা। আর প্রধান শিক্ষকের পাল্টা অভিযোগ, সহকারী শিক্ষক আফরোজা আক্তার তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অবস্থানও নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তার অনিয়মের বিষয়ে জানা আছে শিক্ষা কর্মকর্তাদেরও। সব মিলিয়ে স্কুলটিতে কোমলমতি শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয়দের ও সহকারী শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী মোল্লার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাত, গাছ বিক্রি, স্কুলের ল্যাপটপ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা, সহকারী শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের মহিলা অভিভাবকদের কুপ্রস্তাপ দেওয়া, শ্রেণিকক্ষে বসে ধূমপান করাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা চায় না এমন শিক্ষক দ্বারা স্কুল পরিচালিত হোক।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী মোল্লা ২০১৭ সালে যোগদান করেন। তারপর থেকে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের মোল্লা ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগপত্রটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা বরিশাল উপ-পরিচালক বরাবর দাখিল করেন। এ অভিযোগের প্রসঙ্গে বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা উপ-পরিচালক বরিশাল নিলুফা ইয়াসমিন বুধবার (১৮ আগস্ট) সকালে তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম ও শামীমা সুলতানাকে দায়িত্ব দেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী মোল্লা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, সব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা বাকেরগঞ্জ উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা বাদী-বিবাদীদের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য নিয়েছি। তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সাত্তালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী মোল্লার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। বর্তমানে মামলা চলমান আছে, আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন ডিডি অফিসে পাঠিয়ে দেব।
এদিকে, বুধবার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ রয়েছে, কিছু শিক্ষকের ইন্ধনেই ওই ঝাড়ু মিছিল হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) স্কুলটিতে সেনাবাহিনীর একটি টিম আসলে উপস্থিত শিক্ষক ও স্থানীয়রা প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় সব পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
আরিফুর/এনএইচ