ঢাকা     শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৫ ১৪৩১

দুর্নীতির অভিযোগ, মুচলেকা দেওয়ার দু’দিন পর প্রত্যাহারের আবেদন

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৯, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
দুর্নীতির অভিযোগ, মুচলেকা দেওয়ার দু’দিন পর প্রত্যাহারের আবেদন

আশরাফুজ্জামান ফরিদ

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সহকারী আশরাফুজ্জামান ফরিদ ছাত্র-জনতার উপস্থিতি মুচলেকা দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করার দুই দিন পর তা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। 

স্থানীয়দের দাবি, গত ২০ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মুখে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফজলে বারী, সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনা আক্তার ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান সহকারী আশরাফুজ্জান ফরিদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। 

জনতার রুদ্ররোষে এক কর্মকর্তা ও দুই কর্মচারি নিজ দোষ স্বীকার করে মুচলেকা দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মকছেদুল মোমিন তাদের মুচলেকা গ্রহণ করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার আদেশ দেন। 

জানা গেছে, আশরাফুজ্জামান ফরিদ দুর্নীতির দায়ে ছয় বছর আগে শিবালয় থেকে দোহারে বদলী হন। তদবির চালিয়ে তিনি মানিকঞ্জের সাটুরিয়া আসেন। সেখান থেকে পুনরায় শিবালয়ে এসে টানা প্রায় তিন বছর যাবৎ বিস্তর অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ। 

সেসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২০ আগস্ট মুচলেকা দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন তিনি। কিন্তু দু’দিন পর মুচলেকা প্রত্যাহারের জন্য সিভিল সার্জনের নিকট আবেদনও করেন। সত্যতা যাচইয়ের জন্য সিভিল সার্জন তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন। কমিটিতে রয়েছেন হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মেহেরুবা পান্না, সিভিল সার্জন অফিসের ডা. আল আমীন ও শিবালয়ে কর্মরত আরএমও।

হাসপাতালে কর্মরত একাধিক ব্যক্তি জানান, ফরিদের নামে হাসপাতাল চত্বরে কোনো কোয়ার্টার বরাদ্দ নেই। তা সত্বেও তিনি দীর্ঘদিন দরে ২য় শ্রেণির স্টাফ কোয়ার্টারে এ/সি লাগিয়ে বিলাসবহুল জীবন-যাপন করছেন। হাসপাতালে কর্মরত বিভিন্ন কর্মকর্তা/কর্মচারীকে বদলীয় ভয় দেখিয়ে অনৈতিক সুবিধা আদায় করে আসছেন। চাকরি দেওয়ার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে মোটা টাকা নিলেও তা ফেরৎ না দেয়ায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেক অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈষম্যবিরোধী এক শিক্ষার্থী জানান, ২০ আগস্ট মুচলেকা দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগকারী ডা. ফজলে বারীর অন্যতম সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত প্রধান সহকারী ফরিদ দোষ স্বীকার করে স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে মুচলেকায় স্বাক্ষর করে সিভিল সার্জনের হাতে জমা দিয়েছেন। অথচ, অসৎ উদ্দেশ্যে মুচলেকার বয়ান অমান্য করে ভিন্ন তদবির চালিয়ে এ কর্মস্থলে থাকার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর সাথে স্থানীয় এক শ্রেণির দালাল তাকে সহায়তা করছে। অপর দিকে, ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে আরও নতুন অভিযোগ তদন্ত কমিটির সদস্যদের নিকট তুলে ধরা হয়েছে।

এ বিষয়ে আশরাফুজ্জামান ফরিদ জানান, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। 

তদন্ত কমিটির সভাপতি ডা. মেহেরুবা পান্না জানান, তদন্ত অনুষ্ঠানে ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে ১০ জন ও ৮ জন কর্মকর্তা/কর্মচারী স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। সিভিল সার্জন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন যথাসময়ে জমা দেওয়া হবে।

চন্দন/সনি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়