খুলনায় বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

খুলনা বিভাগে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৪৩ জন। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।  চলতি বছরে আক্রান্তদের মধ্যে খুলনা জেলা শীর্ষ রয়েছে। এ জেলায় মৃত্যু না হলেও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। 

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিপ্তরের সূত্র মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ও দুটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মিলে নতুন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৯৬ জন। এর মধ্যে খুলনায় ২১ জন, যশোরে ৩৬ জন, কুষ্টিয়ায় ৭ জন, মেহেরপুরে ১০ জন, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬ জন, সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একজন, বাগেরহাটে, মাগুরা ও নড়াইলে ৩ জন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এর আগের দিন মঙ্গলবার খুলনা বিভাগে একদিনে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিল ৯৪ জন। এর মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয় খুলনাতে ৩২ জন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর খুলনা বিভাগে মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয় ১ হাজার ৬৪৩ জন। এ সময়ে মৃত্যু হয় ৬ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে খুলনাতে মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয় ৪১৭ জন। এছাড়া, যশোরে ৩৩৪ জন, মেহেরপুরে ২৩২ জন, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৮২ জন, বাগেরহাটে ২৮ জন, সাতক্ষীরায় ১৮ জন, ঝিনাইদহে ৭২ জন, মাগুরায় ৩৭ জন, কুষ্টিয়ায় ১২৮ জন এবং সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩৭ জন। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন ১৯৯ জন।

খুলনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুলনার ৯ উপজেলা ও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও দুটি বেসরকারি হাসপাতাল মিলে এ পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৪১৭ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৫ জন। এর মধ্যে রূপসা, দিঘলিয়া ও ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন করে এবং ২৫০ শয্যা খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ২ জন।

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আরএমও ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় খুমেক হাসপাতালে নতুন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৬ জন। এসময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ জন। বর্তমানে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ৩৯ জন। এ পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলো ২০৪ জন। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ৫ জন। এর মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয় সেপ্টেম্বর মাসে। 

তিনি বলেন, প্রতিদিনই প্রায় ৯-১০ জন নতুন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে। গত মাসের তুলনায় চলতি মাসেই ক্রমেই বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতার বিকল্প নেই। সচেতন না হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বাইরে চলে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব অনেক বেশি পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে মশা ও ভাইরাস দুটিই বেশি। ফলে চলমান বৃষ্টিপাতে আরও বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।