ঢাকা     শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৬ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের উত্থান-পতনের ইতিহাস!

দ্বীন ইসলাম অনিক, নারায়ণগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ২১:১৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের উত্থান-পতনের ইতিহাস!

শামীম ওসমান (ফাইল ফটো)

খেলা হবে! খেলা হবে! এমন অহংকারী ও দাম্ভিকতাপূর্ণ স্লোগানের মাস্টার এবং প্রতিদিন ৮০ রাকায়াত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ুয়া সেই প্রভাবশালী ও কথিত পরহেজগার ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান ও তার পরিবার এখন প্রায় নিশ্চিহ্নের পথে।

যদিও নারায়ণগঞ্জ বললেই এক কথায় চলে আসে ওসমান পরিবারের নাম বা শামীম ওসমানের নাম। এই পরিবারের আদি নিবাস ছিল কিন্তু কুমিল্লায়।

ওসমান পরিবারের উত্থান
নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবারের গোড়াপত্তন করেন শামীম ওসমানের দাদা এম ওসমান আলী। ১৯২০ এর দশকে তিনি কুমিল্লা থেকে নারায়ণগঞ্জে এসে বসবাস শুরু করেন। রাজনীতি, ব্যবসা, সমাজসেবা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে ওসমান আলী তখন থেকেই নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক পরিচিতি পান।

ওসমান আলী ১৯৩৮ সালে নিজ গ্রামে একটি প্রাথমিক ও একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের তানজিম মুসাফিরখানা, রহমতুল্লাহ অডিটোরিয়াম ও গণপাঠাগার নির্মাণে তার অবদান ছিল। এসব জনহিতকর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাকে ১৯৪০ সালে ‘খান সাহেব’ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের দমননীতির প্রতিবাদে তিনি ১৯৪৪ সালে উপাধি বর্জন করেন। ব্রিটিশদের উপাধি বর্জনের সাহসী সিদ্ধান্তের জন্যও সেসময় তিনি সমানভাবে প্রশংসিত হন।

ওসমান পরিবার: ক্রমানুসারে ওসমান পরিবারের সদস্যগণ

লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তান আন্দোলন শুরু হলে ওসমান আলী নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনকে সংগঠিত করেন এবং বামপন্থী ও অন্যান্য স্থানীয় নেতাদের সহযোগিতায় সেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা করেন।

ওসমান আলী ১৯৪৬ সালে সাধারণ নির্বাচনে (নারায়ণগঞ্জ দক্ষিণ নির্বাচনী এলাকা) ঢাকার নবাব খাজা হাবিবুল্লাহকে পরাজিত করে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর মুসলিম লিগের সভাপতি এবং ঢাকা জেলা মুসলিম লিগের সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর মুসলিম লিগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ঢাকা জেলা মুসলিম লিগে ঢাকার নবাবদের সঙ্গে প্রগতিশীল গ্রুপের মতবিরোধ দেখা দেয়। এ বিরোধে ওসমান আলী প্রগতিশীল গ্রুপকে সমর্থন করেন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে নারায়ণগঞ্জে গণসংবর্ধনা দেন।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য ছিলেন এম ওসমান আলী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সেসময়ের রাজনীতিবিদরা তাকে অত্যন্ত সমীহ করতেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। এ জন্য তিনি কারারুদ্ধ হন। ১৯৬২ সালের শাসনতান্ত্রিক আন্দোলন, ছয়দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ওসমান আলী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ তিনি প্রয়াত হন।

(বাঁয়ে) শামীন ওসমান, (ডানে) তার  ভাই সেলিম ওসমান

বাবার পথ ধরেই রাজনীতিতে এসে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন ওসমান আলীর বড় ছেলে ও শামীম ওসমানের পিতা একেএম সামসুজ্জোহা। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য হন। বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতির ময়দানে থাকা সামসুজ্জোহা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের খবরে জানানো হয়, মৃত্যুর ২৯তম বার্ষিকীতে এসে ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।

সামসুজ্জোহা বেঁচে থাকতেই তার বড় ছেলে নাসিম ওসমান স্বৈরাচার এরশাদের সরকারের শাসনামলে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে তিনি সাংসদ হন। পরবর্তীতে ১৯৮৮, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে তিনি এমপি হন।

ওসমান পরিবারের পতন
২০১৪ সালের এপ্রিলে নাসিম ওসমানের আকস্মিক মৃত্যুর কারণে তার ভাই সেলিম ওসমানের এমপি হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। সে বছর উপনির্বাচনে এমপি হন এই ব্যবসায়ী। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি সব কিছুতেই তার একচ্ছত্র আধিপত্যের অভিযোগ রয়েছে। সাংসদ হওয়ার আগেই বড় ভাই নাসিম ওসমান ও ছোট ভাই শামীম ওসমানের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসা বাণিজ্যকে নিজের কব্জায় নেন তিনি।

তবে ওসমান পরিবারের সুখ্যাতির পতন মূলত শুরু হয় ১৯৯৬ সালে শামীম ওসমানের এমপি হওয়ার পর থেকে। সাংসদ নির্বাচিত হয়েই নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে ভয়ংকর রাজনীতিবিদের তকমা লাগে তার গায়ে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে এক কথায় বলতে গেলে প্রায় পুরো নারায়ণগঞ্জ ছিল তার কব্জায়। শামীম ওসমান ও তার ক্যাডারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জবাসী। স্থানীয় সন্ত্রাসীদের এই গডফাদারের বিরুদ্ধে কথা বলার মতো সাহসও দেখাতে পারেনি কেউ। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির পর শামীম ওসমান প্রথমে ভারতে পালিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি কানাডায় চলে যান।

ওসমান পরিবারের নারায়ণগঞ্জের বসত বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা

পরবর্তীতে ২০০৬ সালে নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ফিরে এলেও ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের পট পরিবর্তনে আগের দিন তিনি দেশত্যাগ করেন। আবারও ফিরে আসেন ২০০৯ সালের এপ্রিলে। ততদিনে তার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জের মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তার পক্ষে কাজ করলেও সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হন শামীম ওসমান।

২০১৪ সালের নির্বাচনে অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীকে বাদ দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শামীম ওসমানকে মনোনয়ন দেয়। একতরফা এই নির্বাচনে এমপি হয়ে নারায়ণগঞ্জে একক আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন শামীম ওসমান।

শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমিরি ওসমান ও তার ঘনিষ্ঠ জন, শাহ নিজাম, জুয়েল, খান মাসুদ, দুলাল, রিয়াদ, রাজুসহ নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পদ বাণিজ্য, মিল কারখানায় চাঁদাবাজি, জমি দখল, টেন্ডারবাজী, পরিবহণ ব্যবসা দখলসহ গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। এমনকি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলা ও মেধাবী স্কুলছাত্র ত্বকী হত্যাসহ চাঞ্চল্যকর বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে শামীম ওসমান পরিবারের।

সর্বশেষ চলতি বছরের জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়েন শামীম ওসমানের নেতৃত্বে তার ছেলে অয়ন ওসমান ও তার সহযোগীরা। পরবর্তীতে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট রাতে দেশ ছেড়ে স্বপরিবারে পালিয়ে যান প্রভাবশালী শামীম ওসমান। 

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী শামীম ওসমান বর্তমানে ভারতের দিল্লিতে রয়েছেন বলে জানা গেছে। দিল্লিতে নিজাম উদ্দিন আওয়ালিয়ার মাজারের তার একটি ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

৫ আগস্ট বিকেলে শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে নারায়ণগঞ্জের উৎসুক জনতা শামীম ওসমান ও তার দুই ভাই প্রয়াত নাসিম ওসমান ও সেলিম ওসমান এবং ভাতিজা আজমেরী ওসমানের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাদের বিলাসবহুল বাড়িটি একেবারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এভাবেই নারায়ণগঞ্জের এক সময়ের সিংহ পুরুষ পরিচয় দেওয়া শামীম ওসমান পরিবারের পতন হয়।

সাবেক এমপি শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে জেলা বিএনপি’র সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘এখানে শামীম ওসমান সন্ত্রাসী’র রাজনীতি করেছেন। অনেকের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন। ৫ আগস্ট সেই গডফাদার পালিয়েছে। তিনি কিন্তু তার কোনো কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে করে নেননি। তার অবৈধ অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা হয়নি। শামীম ওসমান ও তার পরিবারের কলঙ্কিত ইতিহাস নারায়ণগঞ্জের মানুষ কখনো ভুলবে না।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, ‘গডফাদার শামীম ওসমান নিজেই নিজেকে ভোট দিয়ে এমপি বানিয়েছিলেন। তিনি বিগত সময়গুলোতে নারায়ণগঞ্জের মানুষকে শান্তি দেননি। আমাদেরকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘর ছাড়া করেছেন। সেদিন আর নেই। কোনো জোর জুলুম আর চলবে না। এই নারায়ণগঞ্জের মাটিতে আর কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলবে না।’

সম্প্রতি দিল্লীর কোনো এক মাজারে শামীম ওসমানকে দেখা গেছে বলে ভাইরাল হওয়া ছবি

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যূষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিলেও এখন থেকে কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। নব্য কোনো টেরোরিস্টেরও উত্থান ঘটতে দেওয়া হবে না। শামীম ওসমান ও তার সহযোগীদের কাছে যেসব অস্ত্র ছিল সেগুলোসহ সমস্ত নারায়ণগঞ্জে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনো গডফাদারের নারায়ণগঞ্জে স্থান হবে না।’

র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমিরী ওসমানের আস্তানায় ২০১৩ সালে ত্বকীকে হত্যা করা হয় বলে ইতোমধ্যে তথ্য পেয়েছি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত করছি। মাঝখানে তদন্ত কিছুটা স্থবির থাকলেও আমরা পুনরায় তদন্তের গতি পেয়েছি। এর প্রধান কারণ আমরা র‌্যাব হেডকোয়ার্টারের সহায়তা পাচ্ছি। আপনারা জানেন, আমরা পাঁচ জনকে এরেস্ট (গ্রেপ্তার) করতে সক্ষমও হয়েছি। কোনো অপরাধীকে আমরা ছাড় দেব না।’

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী শিক্ষার্থী ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বলেন, ‘‘১১ বছর আগে ত্বকীকে অপহরণের দুই দিন পর ৮ মার্চ সকালে শীতলক্ষ্যা নদীর খালের পাড় থেকে পুলিশ ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে। মামলাটির তদন্ত প্রথমে পুলিশ শুরু করলেও যখন তারা নিশ্চিত হয় এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওসমান পরিবার জড়িত, তখন তারা এ মামলার তদন্ত কার্যক্রমে অপারগতা প্রকাশ করে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে তখন মামলাটির তদন্তভার র‍্যাবের ওপর ন্যস্ত হয়।

‘সে বছর ২৯ জুলাই ইউসুফ হোসেন লিটন এবং ১২ নভেম্বর সুলতান শওকত ভ্রমর নামে দুজন ঘাতকের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে র‌্যাব। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর র‍্যাবের তৎপরতা এই মামলায় যতোটুকু দেখা গেছে, এর আগে ১১ বছরে এমন কোনো অভিযান হয়নি। ওসমান পরিবারের সম্পৃক্ততার কারণেই ত্বকী হত্যার তদন্ত পিছিয়েছে। কারণ, শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমিরী ওসমানের আস্তানায় আমার ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছিল।’’

নারায়ণগঞ্জ/এস


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়