ঢাকা     রোববার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৭ ১৪৩১

রেলিংবিহীন সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন, পার হচ্ছে মানুষ

শেরপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
রেলিংবিহীন সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন, পার হচ্ছে মানুষ

শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার রুপাকুড়া এলাকার দুদুয়ার খালের উপর নির্মিত সেতুটিতে রেলিং না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। অন্যদিকে হাজারো মানুষ এই সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছেন প্রতিদিন। এমনকি বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও এই সেতু ব্যবহার করে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে।

এই সেতুতে রুপাকুড়া, দুধকুড়া, দাওয়াকুড়া, চাটকিয়া, দাওধারা, ডালুকোনা, মানিকচাঁদ পাড়া, শেকেরকুড়া, আন্ধারুপাড়া, বারোমারী ও পলাশীকুড়া গ্রামের অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুই যুগ আগে দুদুয়ার খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণের পরের বছরই পাহাড়ি ঢলের পানির স্রোতে ভোগাই নদীর বাঁধ ভেঙে দুদুয়ার খালের সঙ্গে মিশে যায়। ওই সময় সেতুটির বেশিরভাগ অংশ ভেঙে যায় এবং সেতুর কিছু অংশ মাটিতে দেবে যায়। এতে ভেঙে যায় সেতুর রেলিং। পরে আর নতুন করে নির্মাণ বা সংস্কার হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই স্থানীয়রা রেলিংছাড়া ওই সেতুর ওপর দিয়ে ছোট-বড় যানবাহন দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। বর্তমানে মূল সেতুর একটি অংশ ভেঙে পড়ায় লোহার পাত বসিয়ে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। তবে, ছোট-বড় কোনো যানবাহন সেতুতে উঠলে নড়ে উঠে। এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে হাজারো মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে।

স্থানীয় শিক্ষক হুরমুজ আলী বলেন, বর্তমানে রেলিংবিহীন ক্ষতিগ্রস্ত ওই সেতুর ওপর দিয়েই অনেক শিক্ষার্থীর প্রতিদিনের যাতায়াত। এদের মধ্যে চাটকিয়া শহীদ স্মৃতি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, চাটকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দাওয়াকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অন্যতম। আমরা এই রাস্তা দিয়ে পারাপারের সময় অটোরিকশা থেকে নেমে পার হই। স্কুলশিক্ষার্থীরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণভাবে স্কুলে যাচ্ছে। 

রুপাকুড়া গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য এই সেতু পাড়ি দিয়ে পাশের নয়াবিল ও নালিতাবাড়ী উপজেলা শহরে নিয়ে যায়। বর্তমানে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষ ও কৃষকরা মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এটি দ্রুত নির্মাণ না করা হলে ৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে কৃষকের পণ্য পরিবহন করতে হবে। এমনিতেই খালি গাড়ি পার করাই কঠিন সেখানে মালামাল নিয়ে চলা আরও দুরুহ। তাই কৃষি প্রধান এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগের চিন্তা করে সেতুটি নির্মাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রলিচালক রহিম উদ্দিন বলেন, দুই পাশে রেলিং ছাড়া সেতুর উপর গাড়ি চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা এই সেতু পার করতে আস্তে আস্তে ট্রলি চালাই। তবে মাল বোঝাই করে এই সেতু পার হতে খুব ভয় হয়। 

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রথীন্দ্র চন্দ্র বর্মণ বলেন, রুপাকুড়া গ্রামের সেতুটি বারোমারী, নয়াবিল ও নালিতাবাড়ী উপজেলা শহরের সেতুবন্ধন ছিলো। বর্তমানে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তাই রুপাকুড়া গ্রামের সেতুটি নতুন করে নির্মাণ প্রয়োজন।

এ বিষয়ে নালিতাবাড়ি উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. রাকিবুল হাসান রাকি বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে সেতুটির বর্তমান অবস্থা দেখেছি। ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির জায়গায় নতুন একটি সেতুর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।

তারিকুল/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়