ঢাকা     সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৮ ১৪৩১

গাজীপুরে কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা, আটক ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৪:০০, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গাজীপুরে কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা, আটক ৬

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় একটি খাদ্য উৎপাদন কারখানার শ্রমিকরা আজ সোমবার সকালে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময়ে শ্রমিকরা আধা ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবরোধ করে রাখেন। 

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। এ সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও কারখানা ভাঙচুর করার চেষ্টা করায় ছয়জনকে আটক করা হয়। এছাড়া কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তিনটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

আটকেরা হলেন- খোকন মিয়া, সোহাগ মিয়া, নাজমুল মিয়া, উজ্জ্বল হোসেন, শাকিল আহাম্মেদ ও মোবারক হোসেন। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা তিনটি কারখানা হলো- সফিপুর বাজার এলাকার মাহমুদ ডেনিম, বক্তারপুর এলাকার ইকু নীট (সামহার) ও কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড।

শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা গতকাল রোববার সকালে কাজে যোগদান করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রমিকরা হঠাৎ করে মুজুরি নূন্যতম সাড়ে ১২ হাজার টাকা, হাজিরা বোনাস ৮০০ টাকা, সাধারণ ও বার্ষিক ছুটিসহ ১২ দফা দাবিতে কারখানার ভেতর বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকেরা কারখানার পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধে করে বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে।

বন্ধ ঘোষণার পরও ফের আজ সকালে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে এবং বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিক কারখানা বন্ধ থাকার পরও ভেতরে জোড়পূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসময়ে কারখানার ভেতরে অবৈধভাবে প্রবেশ করা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তিনজনকে আটক করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে তাদের হাত মাইক নিয়ে ঘোষণা দিয়ে শ্রমিকদের কারখানা এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। 

কারখানার শ্রমিক আব্বাস উদ্দিন বলেন, আমাদের এই কারখানায় পাঁচ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করেন। সর্বনিন্ম বেতন দেওয়া হয় ৮ হাজার টাকা। এই টাকায় ঘরভাড়া আর খাওয়া দাওয়া করে জীবন যাপন করতে পারছি না। তাই অনেক দিন ধরেই সর্বনিন্ম বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা করার দাবি জানিয়ে আসলেও মালিক পক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের কথাও শুনতে চায়নি।

এদিকে তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকায় বিক্ষোভ করছেন সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেড নামের একটি কারখানার শ্রমিকরা। পাশাপাশি বাঘের বাজার গোল্ডেন রিপিট গার্মেন্টসের শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ রোড বন্ধ করে আন্দোলন করছে। তবে তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন। 

গাজীপুর শিল্প পুলিশের (জোন-২) পরিদর্শক নিতাই চন্দ্র সরকার জানান, কারখানা বন্ধ ঘোষণার পরও কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিক কারখানার ভেতরে জোড়পূর্বক প্রবেশ করায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা কয়েকজনকে আটক করেছে। শ্রমিকরা কিছু সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেছিল। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। 

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইমরান আহম্মেদ জানান, কালিয়াকৈর থেকে সেনাবাহিনী ৪ জনকে আটক করেছেন বলে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় আরও আটক থাকতে পারে। এছাড়াও অনন্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী শ্রমিকদের ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।

রেজাউল/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়