ঢাকা     বুধবার   ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১০ ১৪৩১

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ত্রিমুখী ভোগান্তিতে পানিবন্দি মানুষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ত্রিমুখী ভোগান্তিতে পানিবন্দি মানুষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীর পানিতে বন্দি নিম্নাঞ্চলের মানুষ ত্রিমুখী ভোগান্তিতে পড়েছেন। উজানের ঢলে ফারাক্কার ভাটিতে নদীটিতে পানি বাড়ায় বিশুদ্ধ পানি ও শুকনা খাবার, শহরমুখী হওয়ার জন্য নৌকা এবং গো-খাদ্য সংগ্রহ করতে হিমশিম পোহাতে হচ্ছে তাদের। তবে পানিতে বন্দি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মায় অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘরগুলোয় পানি ঢুকে পড়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুরের বেশ কয়েটি মহল্লার প্রায় ৭০০ পরিবার। তাদের বাড়িতে হাঁটু পর্যন্ত পানি উঠেছে। ইতিমধ্যে অনেকের বাড়ির টিউবওয়েল ডুবে গেছে। সেখানকার অনেক দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। দোকান পাট বন্ধ থাকায় শুকনা খাবার সংগ্রহ করতে পারছেন না তারা। একই সঙ্গে শহরের দিকে যেতে নৌকার প্রয়োজন পড়ছে। কিন্তু নৌকারও সঙ্কট দেখা দিয়েছে এসব এলাকায়। 

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে পানি বাড়ছে পদ্মা নদীতে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ২১ দশমিক ৩০ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। 

এদিকে পদ্মায় পানির বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ২২ দশমিক ৫ মিটার। বর্তমানে পদ্মার পানি বিপৎসীমার মাত্র ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ নিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, যে হারে পানি বাড়ছে তাতে কয়েকদিনের মধ্যেই বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। 

পদ্মাপারের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, বাড়ির মধ্যে পানি ঢুকে গেছে। হাঁটু পর্যন্ত পানি। গবাদি পশুগুলোকে পাশের উঁচু জায়গায় রাখা হয়েছে। তবে গো-খাদ্য সংগ্রহ করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। মাঠ ডুবে যাওয়ায় এই কষ্ট আরও তীব্র হয়েছে। 

দুর্লভপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহআলম বলেন, বাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ায় গৃহস্থালির কাজ করতেও ভোগান্তিতে পড়েছেন নারীরা। উঁচু করে জায়গা বানিয়ে রান্নাবান্না করা হচ্ছে। অনেকের টিউবওয়েল ডুবে গেছে। দুর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। 

ইব্রাহীম নামে স্থানীয় আরও এক বাসিন্দা বলেন, রাস্তা ডুবে যাওয়ার কারণে অনেক দোকানঘর বন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যে কিছুকিছু দোকানঘরে পানি ওঠে গেছে। শুকনা খাবার সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। শহরের দিকে যেতে হলে নৌকার প্রয়োজন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম বলেন, পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে নিম্নাঞ্চলে কিছু এলাকা পানিবন্দি রয়েছে। উপজেলা দুটির নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে শুকনা খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

শিয়াম/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়