নাটোরে ফের পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চরাঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বিঘা জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল আলম চৌধুরী জানান, আগামী পাঁচ থেকে সাত দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় ঈশ্বরদী হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টে পানির লেভেল ১২ দশমিক ৩৮ মিটার। সেই অনুযায়ী বর্তমানে লালপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার প্রায় দেড় মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা যায়, গত তিন দিনে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের নওশারা সুলতানপুর, চাকলা বিনোদপুর, দিয়াড়শংকরপুর, আরাজি বাকনাই, রসুলপুর ও মোহরকয়া আংশিকসহ প্রায় ১৯টি চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বিলমাড়ীয়া গ্রামের বাসিন্দা মুনতাজ আলী জানান, তার ৩ বিঘা জমির মুলা ও বেগুনের আবাদ তলিয়ে গেছে। আরাজি বাকনাই চরের কৃষক আলাল আলী জানান, তার মুলা, গাজর বেগুন খেতসহ সাড়ে ৪ বিঘা জমির ফসল ডুবে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, লালপুরে এবার ৪১০ হেক্টর আখ, ৪৫ হেক্টর শাকসবজি, ১০ হেক্টর কলা, ও ১০ হেক্টর মাসকলাই বন্যায় পানিতে আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে বন্যায় গো-খাদ্য সংকটে বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলের খামারিরা। ইলশামারী চরের খামারি আরিফ মণ্ডল জানান, বন্যায় গরু মহিষ নিয়ে চরম দুর্ভোগে আছি। কোথাও কোনো ঘাস নেই, সব তলিয়ে গেছে।
বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য লাল মোহম্মদ বলেন, গত তিন দিনে আকস্মিক বন্যায় আমার ওয়ার্ডের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি খেত। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে প্রায় পাঁচশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে যাবে।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার প্রীতম কুমার জানান, কিছুদিন নদীর পানি কমতে থাকায় কৃষকেরা নতুন করে ফসল আবাদ করে। কিন্তু ফের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এগুলো ডুবে গেছে। পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে রিপোর্ট করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, আমদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়েছি সার্বিক খোঁজ-খবর রাখার জন্য। কৃষি বিভাগ চর এলাকায় গেছেন। ফসলের ক্ষতির তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রাণী সম্পদ বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোনো গবাদি পশু খাদ্য বা চিকিৎসা প্রয়োজন হলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো বসত-বাড়িতে পানি উঠার খবর পাওয়া যায়নি।
আরিফুল/ইমন