শীতকালীন আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত শরীয়তপুরের কৃষক
শরীয়তপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
শরীয়তপুরে চলতি মৌসুমে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। বর্তমানে তারা খেতে চারা রোপণ ও গাছে আসা সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষকদের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গতবছর জেলার ছয়টি উপজেলায় শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার হেক্টর। চলতি বছরে জেলায় সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩১০ হেক্টর। এরইমধ্যে ৮ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত বছর সবজি বিক্রি করে শরীয়তপুরের কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছিলেন। এ বছর শীত শুরুর অনেক আগেই ফুলকপি, মুলা, বাঁধাকপি, পটল, শিম, টমেটো, করোলা, বেগুন ও লাউসহ অন্য শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন তারা। বর্তমানে চাষিরা খেতে চারা রোপণ ও গাছে আসা সবজি পরিচর্যা করছেন।
কৃষকরা জানান, পুরো শীতের সময়েই বাজারে শীতকালীন সবজির চাহিদা থাকে। তবে মৌসুমের শুরুতে শীতকালীন সবজির ভালো দাম পাওয়া যায়। এ কারণে তারা শীত শুরু হওয়ার আগেই শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু করে দিয়েছেন। তারা বরাবরই শাক-সবজি চাষ করে আসছেন। এতে তারা সফলও হয়েছেন।
জেলার জাজিরা উপজেলার লাউখোলা এলাকার কৃষক সাকিল বলেন, ‘সবজি চাষ করে আমার সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে। আমরা এখন স্বাবলম্বী। এখন আমাদের শাক-সবজি বিক্রির জন্য হাটবাজারে যেতে হয় না। খেত থেকেই পাইকাররা ন্যায্য দামে কিনে নিয়ে যায়। দামও ভালো পাওয়া যায়। এখানে প্রায় সব ধরনের শাক-সবজি চাষ হয়। বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন পাইকারা।’
জেলার গোসাইরহাট উপজেলার দাসের জঙ্গ গ্রামের কৃষক শিহান বলেন, ‘আমি এক বিঘা জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। ৫৫-৬০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। দাম ভালো পেলে ৮০- ৯০ হাজার টাকার মতো লাভ থাকবে। এখন খেত পরিচর্যা কাজে ব্যস্ত। এই সবজি বিক্রি করে আমার সংসার ভালোভাবে চালাতে পারছি। কৃষি বিভাগ থেকে যদি সহযোগিতা বাড়ানো হয় তাহলে আগামতে আরও এক বিঘা জমিতে সবজি চাষ বাড়িয়ে দেব।’
জাজিরা উপজেলার লাউখোলা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘আগাম শীতকালীন সবজির দাম বাজারে সবসময় ভালো পাওয়া যায়। কৃষকরা আগাম বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। শীতকালীন সবজিতে বিভিন্ন ধরনের পোকা ও ছত্রাকের আক্রমণ হয়ে থাকে। আমরা মাঠে থেকে সব সময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি, যাতে কৃষকদের ফসলের কোনো ক্ষতি না হয়।’
শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন বলেন, ‘জেলায় এবার আগাম শীতকালীন সবজি চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শাক-সবজির আবাদ কীভাবে বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’
সাইফুল/মাসুদ