ঢাকা     শুক্রবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১২ ১৪৩১

প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে চেয়ারে বসে গেল ছাত্র

কুমিল্লা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৯, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ২০:৫৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে চেয়ারে বসে গেল ছাত্র

ফাইল ফটো

কুমিল্লার দেবিদ্বারে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে তার কক্ষে গিয়ে চেয়ারে বসে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে ছাত্রের বসে থাকা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর আগে, বুধবার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে পড়া ওই শিক্ষার্থীর নাম ইকরামুল হাসান। তিনি ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কুরুইন গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে।

এ বিষয়ে ইকরামুল হাসান বলেন, আবেগে চেয়ারে বসে ছবি তুলি, এটা আমার ঠিক হয়নি, সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তবে বিষয়টি নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন শিক্ষক, অভিভাবক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও নেটিজেনরা।

ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, টেবিলের উপর থাকা নেম প্লেট সামনে রেখে প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেনের চেয়ারে স্কুল ড্রেস ছাড়া সাদা পোশাকে বসে আছে ইকরামুল। এ সময় ওই কক্ষে আর কাউকে দেখা যায়নি। এ ছবি প্রথমে নিজের ফেসবুকে আপলোড করে ওই ছাত্র লিখেন, আমাদের সু-সম্মানিত আলমগীর স্যার কোথায়?।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল থেকে দেবিদ্বার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ করেন ও বিদ্যালয়ের অর্থে তিনি বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তাই তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে। খবর পেয়ে প্রথমে দেবিদ্বার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের সভাপতি নিগার সুলতানা সেনাবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ না করেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।

মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। তারা বলেছে, দেবিদ্বারে আমার নাকি দুটি বাড়ি আছে। তাদের প্রমাণ দিতে বলেছি, কিন্তু প্রমাণ দিতে পারেনি।

প্রধান শিক্ষকের ভাষ্য, শিক্ষার্থীরা হয়তো কারও ইন্ধনে ভুল বুঝে আন্দোলনে নেমেছে। অভিযোগ তদন্তের আগেই পদত্যাগে বাধ্য করা দেশে এখন যেন একটি রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিগার সুলতানা বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমরা বিধি অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু প্রধান শিক্ষক অফিস থেকে বের হওয়ার পর তারই ছাত্র চেয়ারে বসে ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেয়ার যে ক্ষমাহীন ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব। এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।

রুবেল/কেআই


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়