ঢাকা     রোববার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৪ ১৪৩১

নরসিংদীতে পিচ উঠে সড়কে খানাখন্দ, দুর্ভোগে লাখো মানুষ

নরসিংদী প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১০:২২, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নরসিংদীতে পিচ উঠে সড়কে খানাখন্দ, দুর্ভোগে লাখো মানুষ

নরসিংদীর রায়পুরার আঞ্চলিক সড়কটি এখন আর চলাচলের উপযোগী নেই। বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে ছোট বড় গর্তে পানি জমে বেহাল অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ বয়ে চলাচল করছেন কয়েক ইউনিয়নের লাখো মানুষ। 

এই সড়কে যানবাহন চলাচলে খানাখন্দের কারণে ছোট বড় দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রায়পুরা টু সাপমারা ৯ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কের রায়পুরার রাজপ্রাসাদ এলাকার অবস্থা করুণ। আশপাশের বাসা বাড়ি ও ড্রেনেজের পানিতে একাকার হয়ে আছে খানাখন্দগুলো। প্রায় ৫০ মিটার সড়কই এখানে আর ব্যবহার উপযোগী নেই। জমে থাকা পানির কারণে গর্তের গভীরতা বুঝাই দায়। এ অবস্থায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। 

স্থানীয় বাসিন্দা চালক-পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, শুধু রাজপ্রাসাদ ওই নয় এ ছাড়াও সাপমারা, পৌর যুগিবাড়িমোড় ও সাবেক মেয়রের বাড়ির সামনের সড়কে অসংখ্য ছোট বড় গর্তে পানি জমে পিচঢালাই উঠে গেছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কটির বেহাল দশায়, চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যেন দেখারও কেউ নেই। 

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পানি নিষ্কাশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে থাকার কারণেই এই হাল। সড়কটি পূর্বাঞ্চলের মির্জাপুর, মুছাপুর, মহেষপুর, চাঁনপুর, রায়পুরা ইউনিয়নের লাখ লাখ মানুষের জেলা-উপজেলা সদরে আসার একমাত্র পথ। ফলে দীর্ঘদিন যাবৎ এসব মানুষের দুর্ভোগ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। প্রায়ই যানবাহন চলাচলে ছোট বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে। পাশ দিয়ে পথচারীরা হাঁটবেন, তারও কোনো উপায় নেই। যানবাহন ধীর গতিতে চলাচলের সময় পথচারীদের গায়ে কর্দমাক্ত পানি ছিটকে পড়ছে। দ্রুত সড়কটি সংস্কার করে দাবি জানান তারা।

তাসফিয়াসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, সড়কটি দিয়ে কয়েকটি স্কুল কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে।  বিভিন্ন স্থানে গর্তগুলোতে পানি জমে থাকে। স্কুলে যাতায়াতের সময় গর্তে জমে থাকা কাদাপানি ছিটকে পড়ে পোশাক নষ্ট হয়। অবস্থা এতই খারাপ যে হেঁটেও চলা যায় না।

স্থানীয় বাসিন্দা মজনু মিয়া বলেন, মুছাপুর ও মহেষপুর, রায়পুরা ইউনিয়নসহ আশপাশের লাখো মানুষ সড়কটি দিয়ে চলাচল করে। প্রায়ই গাড়ি উল্টে ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন যাবৎ এই অবস্থা অথচ দেখারও কেউ নেই। 

অটোরিকশাচালক ফজলুর রহমান বলেন, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করি। আঞ্চলিক সড়কে বড় গর্তে পানি জমে থাকে। বিকল্প সড়ক না থাকায় ওই সড়কে পুরাটাই ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। গাড়ির যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। কাদাপানি যাত্রীদের গায়ে ছিটকে পড়ায় গালমন্দ শুনতে হচ্ছে। 

সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক কাসেম মিয়া বলেন, এই সড়ক দিয়ে দিনে ১০-১২ বার গাড়ি নিয়ে আমার যেতে হয়। রাস্তার এই দুর্দশায় প্রায়ই নানান সমস্যায় পড়তে হয়। রাস্তার পাশে ড্রেনের ব্যবস্থা থাকলে এমনটা হতো না। প্রায়ই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়, যন্ত্রপাতি বেশি বেশি নষ্ট হয়। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। 

রায়পুরা উপজেলা প্রকৌশলী মো মাজেদুল হক সজীব বলেন, বেহাল ওই রাস্তাটি দিয়ে প্রায়ই যেতে হয়। স্থানীয় বাসাবাড়ির ড্রেনেজের পানি সড়কে আসার কারণেই মানব সৃষ্টির সমস্যা। স্থানীয়দেরকে বলে দিয়েছি, বাসাবাড়ির পানি সড়কে না আসার আউটলেট বের করে দিতে। স্থানীয়রা সচেতন হলেই তা সম্ভব। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলেই সড়কটি দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে।


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়