ঢাকা     সোমবার   ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৫ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় রশিদিয়া দরবার শরিফ ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ০৯:২৪, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
কুষ্টিয়ায় রশিদিয়া দরবার শরিফ ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চরসাদিপুর ইউনিয়নে রশিদিয়া দরবার শরিফে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুরের পর ওই দরবার শরিফে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘটনাটি ঘটে। 

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম এ হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

হামলার সময় ওই দরবার শরিফে বাৎসরিক ওরস মাহফিল চলছিল। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চরসাদিপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এশার নামাজের পর ১৫-২০ জন নানা বয়সী মানুষ একত্রিত হন। দরবার শরিফে মাদক সেবন ও গান বাজনা হয় এমন দাবি করেন তারা। লাঠি সোঁটা নিয়ে ওই দরবার শরিফ ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সাবেক এক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে। 

দরবার শরিফের পরিচালক জিল্লুর রহমানের ছেলে রাসেল বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর আগে এই খানকার শরিফ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেখাশোনার দায়িত্বে আমার বাবা রয়েছেন। গ্রামের অনেকেই একত্র হয়ে এই খানকার শরিফে দোয়া মাহফিল ও গান বাজনার আয়োজন করে। তাছাড়া প্রতিবছর ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছরের মতো আজও ওরস মাহফিল ছিল। রাতে দোয়া মাহফিলের মোনাজাত চলছিল। এ সময় হঠাৎ ১৫ থেকে ২০ জন লাঠি সোঁটা নিয়ে দরবার শরিফে হামলা চালিয়ে দরবারের চারচালা ঘরটি ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভয়ে আমি, বাবাসহ উপস্থিত ভক্তরা পালিয়ে যাই। তবে কাউকে আঘাত করা হয়নি।’ 

রাসেল আরও বলেন, ‘এর আগে স্থানীয় মসজিদে এশার নামাজ শেষ করে হামলাকারীরা একত্র হন। এই হামলায় সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বয়ানের ইন্ধন রয়েছে। তাকে ঘটনাস্থলে দেখেছি। খানকার শরিফে কোনো মাদকসেবন হয় না। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর ওরসে গান বাজনার আয়োজনও ছিল না। হামলাকারীদের অভিযোগ সঠিক নয়। 

নিরাপত্তার স্বার্থে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি দরবার শরিফের পরিচালক জিল্লুর রহমান। 

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বয়েন বলেন, ‘দরবার শরিফের নামে সেখানে মাদকের আড্ডা চলে। সেজন্য স্থানীয় ছেলেরা তা ভেঙে দিয়েছে।’ 

অভিযোগ অস্বীকার করে সাদিপুর মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আবু তালেব বলেন, ঘটনার সময় আমি অন্য একটি বাজারে ছিলাম। দরবারে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ফেসবুক থেকে জেনেছি।

চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মেছের আলী খাঁ বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, ‘হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাটি আমি জেনেছি। তবে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি জানা নেই। চর সাদিপুর দুর্গম এলাকা হওয়ায় এখন ঘটনাস্থলে যাওয়া সম্ভব নয়। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কাঞ্চন/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়