শেরপুর
মহারশি নদীর বাঁধে ভাঙন, তলিয়েছে ৪২০০ হেক্টর জমির ধান
শেরপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঝিনাইগাতীতে মহারশি নদীর বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে এই উপজেলাতেই কমপক্ষে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে, এখন পর্যন্ত ৪২০০ হেক্টর জমির আমন ধান এবং ১ হাজার হেক্টর জমির সবজি খেত পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার।
আরও পড়ুন: শেরপুরে তিন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ভোর থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েন কয়েক হাজার মানুষ। ঝিনাইগাতী শহরের অনেক দোকানে এবং বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন সরকারি অফিস।
ঝিনাইগাতী উপজেলার ঝিনাইগাতী সদর, গৌরিপুর, ধানশাইল, হতিবান্ধা ও মালিঝিকান্দা পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকায় বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে প্রবল বেগে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনে সমস্যা দেখা দেওয়ায় দুর্ভোগে আছেন বাসিন্দারা।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য বলছে, ঝিনাইগাতীর পাহাড়ি নদী মহারশির পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি থেমে গেছে, তাই পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা আপাতত নেই। আজ ভোর থেকে পানি নিম্নাঞ্চলের দিকে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গতকাল থেকেই মহারশি নদীতে পানি বাড়ছিলো। গভীর রাতে মহারশি নদীর কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে যায়। এরপর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার জানান, এখন পর্যন্ত ৪২০০ হেক্টর জমির আমন ধান এবং ১ হাজার হেক্টর জমির সবজি খেত পানিতে ডুবে আছে। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, ‘ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর বাঁধ নির্মাণে ইতোমধ্যে আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু হয়েছে। পানি কমে গেলেই কাজ শুরু হবে।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘আমরা পানবন্দি এলাকা পরিদর্শন করেছি। যারা নদীর তীরবর্তী এলাকায় আটকা পড়েছেন তাদের উদ্ধার করা হচ্ছে। শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তারিকুল/মাসুদ