ঢাকা     রোববার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২১ ১৪৩১

লক্ষ্মীপুর ৭৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা, চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৯, ৬ অক্টোবর ২০২৪  
লক্ষ্মীপুর ৭৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা, চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি 

দুই দিন পরেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সনাতন ধর্মের শাস্ত্র অনুযায়ী, প্রতিবছর শরৎকালে দুর্গাপূজা উদযাপন করা হয়। এ কারণে একে শারদীয় দুর্গোৎসবও বলা হয়ে থাকে। এ উৎসবকে ঘিরে লক্ষ্মীপুরে ৭৮টি মণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বাহারি রঙ আর কারিগরদের হাতের সুনিপুণ ছোঁয়ায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে প্রতিমা।

শারদীয় দুর্গোৎসবে শান্তি-শৃঙ্খলা ও উৎসবের আমেজ বজায় রাখতে সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। সেই সঙ্গে পূজা চলাকালীন গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সজাগ অবস্থায় রয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের নিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কিছুটা শঙ্কার কথা জানিয়েছেন সনাতন ধর্মীবলম্বী নেতারা। 

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, লক্ষ্মীপুর জেলায় ৭৮টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে। এর মধ্যে ৭৬টি প্রতিমা পূজা ও ২টি ঘট পূজা হবে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ১৮টি মণ্ডপ, রায়পুর উপজেলায় ১২টি মণ্ডপ, রামগঞ্জ উপজেলার ১৮টি মণ্ডপ, রামগতি উপজেলায় ১৪টি মণ্ডপ ও চন্দ্রগঞ্জ উপজেলায় ১৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার জন্য প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, দ্রুতগতিতে চলছে দুর্গোৎসবের প্রস্তুতির কাজ। দম ফেলার ফুরসত নেই কারিগর থেকে শুরু করে তোরণ নির্মাণ ও আলোকসজ্জার কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর। মণ্ডপে মণ্ডপে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবকরাও।

লক্ষ্মীপুর শহরের আনন্দময়ী কালিমন্দির (সর্বজনীন) প্রতিমা তৈরির কারিগর সজল পাল বলেন, ‘চলতি বছর প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অনেক বেড়েছে। ফলে আমাদের যে টাকা আয় হওয়ার কথা, তা আর হচ্ছে না। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার চাহিদা একটু কম। শেষ সময়ে অর্ডার করায়, সময় কম পেয়েছি। এবার লক্ষ্মীপুরে দুটি মন্দিরে অয়ন, অমিতসহ আমরা তিনজন কাজ করছি। গত বছর কাজ করেছি ৫টি মন্দিরে।’

শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালি মন্দির সাংগঠনিক সম্পাদক নিপু শীল বলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করেছি। আশা করি, এবারের পূজা আনন্দ ও নিরাপদে উৎযাপন করতে পারব। পূজা মণ্ডপ ঘিরে সকল ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যাপক প্রস্তত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মণ্ডপগুলোতে কেউ যেন বিশৃঙ্খলা ঘটাতে না পারে, সেই জন্য পুলিশ সর্বদা কাজ করবে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এ উৎসবে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।’

বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠন সভাপতি শিমুল সাহা জানান, মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তায় সবগুলো প্যান্ডেল সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কিছুটা শঙ্কা কাজ করছে। তবে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা হিন্দু সম্প্রদায়ের। 

আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

জেলা পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পূজাকে ঘিরে জেলায় গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিছু মণ্ডপকে অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব মণ্ডপে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটা মন্দিরেই পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও গ্রাম পুলিশসহ স্বেচ্ছাসেবকের বিভিন্ন টিম কাজ করবে। এছাড়াও সেনাবাহিনীর মোবাইল টিম মাঠে থাকবে। দেবী বিসর্জন পর্যন্ত সার্বক্ষণিক প্রশাসনিক নজরদারি থাকবে।

লিটন/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়