ঢাকা     সোমবার   ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২২ ১৪৩১

রংপুরে ডিজিটাল আইনের মামলায় ৩ সাংবাদিক খালাস 

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩১, ৭ অক্টোবর ২০২৪  
রংপুরে ডিজিটাল আইনের মামলায় ৩ সাংবাদিক খালাস 

রংপুরে অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে তিন সাংবাদিক বেকসুর খালাস পেয়েছেন। সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে দীর্ঘ শুনানি শেষে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আবদুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন।

বেকসুর খালাস পাওয়া তিন সাংবাদিক হলেন, অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকা পোস্টের নীলফামারী প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম, দৈনিক যুগের আলো ও মানবকণ্ঠের প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মখদুমী ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের সাবেক প্রতিনিধি মামুন রশিদ। শরিফুল ইসলাম এর আগে অনলাইন পোর্টাল রংপুরের কণ্ঠে কাজ করতেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে ভিজিডির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিক মহিউদ্দিন মখদুমী, মামুন রশিদ ও শরিফুল ইসলাম। সংবাদ প্রকাশের কারণে ইউপি চেয়ারম্যানের মানহানির অভিযোগে তার শ্বশুর মোস্তাফিজার রাহমান বাদী হয়ে ২০২১ সালের ১৪ জুন রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

আরো পড়ুন:

মামলার অভিযোগ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় দৈনিক যুগের আলো ও দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকায় ২০২১ সালের ২৪ মে ‘ভিজিডির কার্ডে চাল নেন সদ্যপুস্করনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের শাশুড়ি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক মহিউদ্দিন মখদুমী। একইদিনে অনলাইন নিউজপোর্টাল রংপুরের কণ্ঠের সাংবাদিক একই শিরোনামে খবর প্রকাশ করেন। দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকাতেও একই খবর প্রকাশিত হয়।

এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে সদ্যপুস্করনী ইউপির চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা এবং বাদীর স্ত্রী ও জামাতার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর কোতোয়ালি থানার উপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

গত বছরের ২৫ আগস্ট বিচার কার্যক্রম শুরুর পর থেকে আদালত বিভিন্ন সময়ে আট জন সাক্ষীর মধ্যে পাঁচ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এরপর আজ বিচারের রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এ দিন বাদীপক্ষের অনুপস্থিতিতে দীর্ঘ ৪০ মিনিট বিচারকের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। বাদীর অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিদের বেকসুর খালাস দেন।

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ বলেন, মামলায় তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ, শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে আজ রায়ের মাধ্যমে তিন সাংবাদিককে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবার পাশাপাশি বিচার বিভাগ যে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, তা আবারও প্রমাণিত হলো।’
 

আমিরুল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়