ঢাকা     শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৮ ১৪৩১

জুমের ফলনে খুশি খাগড়াছড়ির চাষিরা 

খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২১, ৯ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ১৬:৩৩, ৯ অক্টোবর ২০২৪
জুমের ফলনে খুশি খাগড়াছড়ির চাষিরা 

জুমের পাকা ধানের গন্ধ ছড়াচ্ছে খাগড়াছড়ির পাহাড়ি জনপদে। সবুজ পাহাড়ে এখন সোনালী রং লেগেছে। পাকা ধানের গন্ধ ছড়াচ্ছে সবখানে। উৎসবমুখর পরিবেশে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ের ঢালু জমিতে চাষ করা ধান তোলায় ব্যস্ত চাষিরা। তাদের ধারণা, অন্য বছরগুলোর চেয়ে এবার ফসলের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর খাগড়াছড়িতে ১২০০ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে জুম চাষের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছিল। চাষাবাদ হয়েছে ১১২৪ হেক্টর জমিতে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী চাষবাদ পদ্ধতি ‘জুমচাষ’। পাহাড়ের ঢালু জমিতে ধান, ভুট্টা, তিল, আদা-হলুদ, মারফাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ করেন জুমিয়ারা। এখন তারা জুমের ধান কাটা শুরু করেছেন। একই সঙ্গে চাষ করা বিভিন্ন ধরনের সাথী ফসলও ঘরে তুলতে শুরু করেছেন।  

আরো পড়ুন:

খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সীমানা পাড়ার জুমিয়ারা (হতেন ত্রিপুরা, হলেন্দ্র ত্রিপুরা, বসন্ত ত্রিপুরা) জানিয়েছে, বিগত বছরের চেয়ে এ বছর জুম ফলন ভালো হয়েছে। ধানের সঙ্গে সাথি ফসলসমূহের ফলন হয়েছে ভালো। তারা অনেক খুশি। 

কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, যারা আগে ধান রোপণ করেছেন, তাদের ধানে পোকা ধরেছে। কৃষি বিভাগের তদারকি বা পরামর্শ পেলে হয়তো পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতো ধান বলে ধারণা ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের।  

জুমের ধান কাটা ও ঘরে তোলা উপলক্ষে অনেকেই নিজেদের প্রচলিত নিয়মে জুম উৎসব পালন করেন। অনেকে জুম চাষের ফলন ভালো হওয়ার জন্য এবং ফসলে যাতে পোকায় আক্রমণ না হয় সেজন্য বিভিন্ন পূজা করে থাকেন।

জানা গেছে, জুমিয়ারা আগে এক জায়গায় শুধু বছরে একবার জুম চাষ করতেন। তবে, জায়গা না থাকার কারণে এখন প্রতি বছর এক জায়গাতে জুম চাষ করতে হচ্ছে তাদের।

কৃষি বিভাগে সূত্রে জানা গেছে, বৈশাখ ও জৈষ্ঠ মাসে পাহাড়ে বসবাসরত জুমচাষিরা জুমের বীজ রোপণ শুরু করেন। ফসল তোলা শুরু হয় ভাদ্র মাস থেকে। ইতোমধ্যে অনেকে জুমের ধান কেটে নিয়েছেন। সাথি ফসল হিসেবে চাষ কার বিভিন্ন শাক-সবজি, মরফা, কুমড়াও তুলেছেন তারা ঘরে। এরপর পর্যায়ক্রমে তিল, তিষির ফলন তুলবেন জুমিয়ারা। 

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ বাছিরুল আলম বলেন, ‌‘এ বছর খাগড়াছড়িতে ১২০০ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে জুম চাষের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছিল। চাষাবাদ হয়েছে ১১২৪ হেক্টর জমিতে। জুম চাষিরা মূলত স্থানীয় জাতের ধান চাষ করে থাকেন। চাষিরা যাতে ভালো ফলন পান, সেজন্য তাদের ব্রি উদ্ভাবিত ৬৬, ৭১, ৮৩ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। 

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জুম চাষ তদারকি করেন না এমন অভিযোগ স্বীকার এই কর্মকর্তা বলেন, আগামীতে যে এলাকায় যিনি কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে থাকবেন, তিনি যেন সে এলাকার জুমে চাষ সরেজমিনে পরিদর্শন করে চাষিদের পরামর্শ দেন সে নির্দেশনা দেওয়া হবে। 

রুপায়ন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়