ঢাকা     রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

শেরপুরে উঁচুতে পানি কমলেও নিচুতে দুর্ভোগ বেড়েছে

শেরপুর প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৭, ৯ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ২০:০৪, ৯ অক্টোবর ২০২৪
শেরপুরে উঁচুতে পানি কমলেও নিচুতে দুর্ভোগ বেড়েছে

শেরপুরে টানা চার দিন ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে জেলার নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীতে ক্ষয়ক্ষতির পরে এখন দুর্ভোগ বেড়েছে সদর উপজেলা ও নকলা উপজেলার অনেক নিচু এলাকায়। নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী থেকে নেমে আসা পানি এখন সদর উপজেলা ও নকলা উপজেলার নিচু এলাকায় ঢুকেছে। 

বুধবার (৯ অক্টোবর) সকালে সদর উপজেলার গাজীরখামার ও ধলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তির্ণ এলাকায় বাড়িঘর ডুবে আছে। সেইসঙ্গে আমন ধান ও সবজি খেত পানির নিচে ডুবে আছে। এলাকার অর্ধেকের বেশি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের আবুল হোসেন বলেন, ‘৬ অক্টোবর রাতে হঠাৎ করে পানি আসে। আমরা বুঝে উঠার আগেই বাড়িঘরের সব জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে। ছেলে-মেয়ে পরিবার নিয়ে কোন দিক যাব ভেবে পাচ্ছিলাম না। ঘরবাড়ি রেখেও যেতে ইচ্ছা করে নাই। পানি না বাড়লেও তিন দিন হয়ে গেল পানি কমার খবর নেই।’ 

আরো পড়ুন:

ধলা ইউনিয়নের বাসিন্দা গফুর মিয়া বলেন, ‘আমাদের বাড়ি এলাকার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু জায়গায়। এরপরও এবার বাড়িতে পানি ঢুকেছে। গরু-ছাগল নিয়ে বিপদে আছি। আমার শহরে বাসা আছে। তাই শহরের বাসায় ছেলেমেয়েদের পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখান থেকে রান্না করে নিয়ে এসে বাড়ির অন্য সবাইকে খাওয়াচ্ছি। বলা চলে এমন দুর্ভোগ আমার জীবনে হয়নি।’ 

গাজী খামার ইউনিয়নের পীরের বাড়ি এলাকার বাসিন্দা মনির আহমেদ বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে স্কুলের বারান্দায় কাটিয়েছি। এবার পানি ক্ষতি করেছে। কারো পুকুরে মাছ নেই। ধানতো খুঁজেই পাওয়া যায় না। ধানক্ষেতের উপর দিয়ে পানি। দেখে মনে হবে নদী। সরকার সহায়তা না দিলে না খেয়ে মরতে হবে।’  

জেলা কৃষি বিভাগ ও মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, জেলার ৪৭ হাজার হেক্টর আবাদি জমির আমন ধান ও ১ হাজার হেক্টর জমির সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ৬ হাজার ৭১টি মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সরকারি হিসাবে প্রায় ৭১ কোটি টাকা হলেও তা শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। জেলার অন্তত পৌনে দুই লাখ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, জেলায় বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খাবার বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এখন যারা নিচু এলাকায় আছে, তাদের জন্য একই ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যে বিতরণের জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে টিন ও নগদ অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তা এলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

তারিকুল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়