পার্বত্য এলাকায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
বাড়তি ছুটি ‘আফসোস’ বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীদের
রাঙামাটি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
দুর্গাপূজায় একদিনের বাড়তি ছুটি ‘আফসোস’ বাড়িয়েছে রাঙামাটির পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। পূজা উপলক্ষে টানা তিনদিনের ছুটিতে অগ্রিম বুকিংও হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের আশা ছিল, এবার অন্তত গত তিনমাসের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবে। কিন্তু পার্বত্য জেলায় পর্যটক ভ্রমণে প্রশাসনের ২৪ দিনের ‘নিষেধাজ্ঞা’য় ব্যবসায়ীদের সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার পরিবর্তে আরও বেড়েছে লোকসান। এখন বৃহস্পতিবারও সরকারি ছুটির আওতায় আসায় টানা চারদিনের ছুটিতে দেশ। আর এত লম্বা ছুটি মানেই পর্যটন এলাকায় উপচে ভরা ভিড়। কিন্তু এই বাড়তি ছুটি কেবল রাঙামাটির ব্যবসায়ীদের ‘আফসোস’ বাড়িয়েছে।
এর আগে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটক ভ্রমণে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। গত তিন মাস ধরে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সম্প্রতি পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাতের কারণে এমনিতেই পর্যটকরা পাহাড়বিমুখ ছিলেন। এখন ‘নিরাপত্তা’র কারণ দেখিয়ে প্রশাসনের পর্যটক ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার লোকসান হবে জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
হোটেল হিল পার্কের ব্যবস্থাপক স্বপন শীল বলেন, ‘গত জুলাই থেকে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে পর্যটক নেই বললেই চলে। অক্টোবর মাস পর্যটনের পিক সিজন। কিন্তু সিজন ঢুকতেই পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আমাদের লোকসান বাড়িয়েছে। অন্তত পূজার এই ছুটির সময়টা পেলেও ব্যবসায়ীদের জন্য অনেকটা সুবিধা হতো।’
তিনি আরও বলেন, এ বছর পূজায় আরও একদিন ছুটি যোগ হয়েছে। এতে আমাদের আফসোসই বাড়ছে। আপাতত ‘আফসোস’ ও ‘লোকসান’ ছাড়া আমাদের আর কিছুই বলার নেই।
টেক্সটাইল বিক্রয়কর্মী অর্পিতা চাকমা বলেন, ‘এতদিন বসে ছিলাম। ছুটিতে পর্যটকদের জন্য বাড়তি কালেকশনও যোগ করেছিলাম। কিন্তু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় কোনও পর্যটক নেই। তারপরও দোকান খোলা রেখেছি। কোনও ক্রেতা নেই। এদিকে তিনদিনের ছুটির জায়গায় এবার চারদিন ছুটি হয়েছে। এই সুযোগ হাতছাড়া হওয়াতে দুঃখ লাগছে।’
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব রাঙামাটি (টোয়ার) এর সভাপতি ও গরবা ট্যুরিজমের সিইও বাদশা ফয়সাল বলেন, ‘এই বাড়তি ছুটি আমাদের আফসোস বাড়িয়েছে। নিষেধাজ্ঞায় আমাদের অর্থনৈতিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তেমনি আমাদের মনোবলও নষ্ট করেছে। অন্তত এই কয়েকটা দিন আমরা ব্যবসা করতে পারলে আমাদের আগের সঙ্কট অনেকটাই পুষিয়ে নিতে পারতাম। এখন আমরা আরও বেশি সঙ্কটে পড়ে গেলাম। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরও পর্যটকরা এই এলাকায় আসতে চাইবে না। তারা ভাববে, ওখানকার পরিস্থিতি তো ভালো না। সবমিলে আমাদের সব সেক্টরে বিশাল ক্ষতি হয়ে গেল।’
শংকর/ইমন