যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীর বিবস্ত্র ছবি ফেসবুকে
পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার একটি গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী তার স্ত্রীর বিবস্ত্র ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ অভিযুক্ত সিয়াম আলীকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) ভোরের দিকে খানমরিচ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ৬ অক্টোবর ভুক্তভোগী পাবনার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন। পাবনার ৪ নং আমলী আদালতের বিচারক বেবী নাজনীন বাদীর লিখিত আবেদন আমলে নিয়ে ভাঙ্গুড়া থানাকে এজহার গ্রহণের নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তারকৃত সিয়াম উপজেলার হাটউধুনিয়া গ্রামের আল হেলালের ছেলে। তিনি ডেকোরেটর শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
মামলার নথী সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৪ জুলাই অভিযুক্ত সিয়ামের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুুকের জন্য সিয়াম তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। পরে তিনি তার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ঘটনায় সিয়ামের স্ত্রী পাবনার আদালতে মামলা করেন। বিপদ বুঝতে পেরে সিয়াম তার স্ত্রীকে সংসারে ফিরিয়ে এনে মামলা প্রত্যাহার করিয়ে নেন। এরপর স্বাভাবিক আরচণ করে সংসার করতে থাকেন। পরে তিনি কৌশলে স্ত্রীর বিবস্ত্র ছবি ও অন্তরঙ্গ ভিডিও নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। এরপরে আবারও যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন সিয়াম।
এক পর্যায়ে সিয়াম স্ত্রীর ভাইয়ের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে বোনের ধারণকৃত ছবি পাঠিয়ে যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক না দিলে ছবি নেটে ভাইরাল করে দেওয়ারও হুমকি দেন। বিষয়টি গৃহবধুর পরিবার গুরুত্ব না দিলে সিয়াম তার স্ত্রীর বিবস্ত্র ছবি দিয়ে ফেসবুকে একটি ফেইক আইডি খুলে তা ছড়িয়ে দেন।
ভুক্তভোগী গত ৬ অক্টোবর পাবনার ৪ নং আমলী আদালতে যৌতুক, পর্নোগ্রাফি আইনে ও পারিবারিক আদালতে মোট তিনটি মামলা করেন। পর্নোগ্রাফি আইনে করা মামলায় আদালত ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুয়ায়ী মামলা নথিভুক্ত করা হয়। শনিবার ভোরের দিকে খানমরিচ এলাকা থেকে অভিযুক্ত সিয়ামকে গ্রেপ্তার ও তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’
শাহীন/মাসুদ