ঢাকা     শনিবার   ১২ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২৭ ১৪৩১

১৩ অক্টোবর থেকে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ আহরণ বন্ধ 

চাঁদপুর প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪৪, ১২ অক্টোবর ২০২৪  
১৩ অক্টোবর থেকে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ আহরণ বন্ধ 

মা ইলিশের প্রজনন রক্ষায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণে নিষিধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত ১২টার পর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন নদীতে ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ থাকবে। সরকারের এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স গঠনসহ সব প্রস্তুতি নিয়েছে।

জেলা মৎস্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে হাইমচেরর চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর প্রায় ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকা। নদী উপকূলীয় মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণে জড়িত নিবন্ধিত জেলে ৪৪ হাজার। নিষেধাজ্ঞার সময়ে সাগর থেকে ইলিশ মিঠাপানিতে ডিম ছাড়ার জন্য ছুটে আসে। এ সময় যাতে করে জেলেরা নদীতে নামতে না পারে, সেই জন্য উপকূলীয় জেলে পাড়ায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত আছে। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও আড়ৎতে ব্যানার সাঁটানো হয়েছে। 

সদর উপজেলার রামদাসদী এলাকার জেলে শাহজাহান, মোজাম্মেল ও ইব্রাহীম জানান, ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্য সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তা মানা হয়। তবে জেলার বাইরে থেকে অন্য জেলেরা এসে মা ইলিশ ধরে নিয়ে যায়। নৌপুলিশ ও মৎস্য বিভাগের কিছু কর্মকর্তা অর্থের বিনিময়ে তাদের ইলিশ ধরার সুযোগ করে দেয়। এসব বিষয়গুলো বন্ধ করতে পারলে সরকারের উদ্যোগ সফল হবে। বেকার সময়ে সরকার যে সহায়তা করে তা বৃদ্ধির দাবি জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে মৎস্য আইনে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান প্রযোজ্য হবে। তিনি জেলেদের নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান এবং এ কার্যক্রম সফল করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের মৎস্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু কাওসার দিদার বলেন, প্রজনন সময়ে সাগর থেকে ইলিশ নদ-নদীতে আসে। ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন জেলেরা যেন ইলিশ আহরণ থেকে বিরত থাকে, তাহলে ইলিশ প্রজননের সুযোগ তৈরি হবে এবং জাটকা উৎপাদন বাড়বে। এতে করে অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। 

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, ইলিশ সামুদ্রিক মাছ। ডিম ছাড়ার জন্য এ সময়ে মিঠাপানিতে ছুটে আসে। যে কারণে সরকার আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিনে জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে। মা ইলিশ রক্ষায় ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স গঠনসহ সব প্রস্তুতি নিয়েছে।

এদিকে, আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভা ও নৌর‌্যালিতে যোগ দিয়ে জেলা প্রশাসক মোহসীন উদ্দিন বলেন, আগে যেসব আড়তের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছিল, এবার সেগুলোর বিষয়ে মনিটরিং করা হবে। কোনোভাবেই এ নিষেধাজ্ঞায় নদীতে জেলেদের নামতে দেওয়া হবে না। 
 

জয়/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়