ঢাকা     শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

বান্দরবানে সীমিত পরিসরে হবে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব

বান্দরবান প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩৫, ১৫ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ১৯:০৮, ১৫ অক্টোবর ২০২৪
বান্দরবানে সীমিত পরিসরে হবে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব

প্রবারণা পূর্নিমা উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের ফানুস উড়িয়ে থাকেন বুদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। ফাইল ফটো

বান্দরবানে বৌদ্ধ  ধর্মাবলম্বীদের ‘মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে’ বা ‘প্রবারণা পূর্নিমা’ উৎসব আগামী ১৭ ও ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছর এ উৎসব ঘিরে চার দিনব্যাপী বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন করো হলেও এবার পরিস্থিতির কারণে উৎসব সীমিত পরিসরে দুই দিন পালন করা হবে। এ তথ্য জানিয়েছে বান্দরবান উৎসব উদযাপন পরিষদ কমিটির সভাপতি অংচমং মারমা।

দুই দিনের উৎসবে অনুষ্ঠানের সূচি থেকে বাদ পড়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পিঠা তৈরি উৎসব। কেবল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার জন্য ফানুস উড়ানো হবে সীমিত পরিসরে। 

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা জানান, আদিকাল থেকে তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাস (উপোস) থাকার পর পাহাড়ি মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে (প্রবারণা পূর্ণিমা) উৎসব পালন করে আসছেন। কথিত আছে, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা গৌতম বুদ্ধ এই আশ্বিনী পূর্ণিমায় তার মাথার চুল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাই আশ্বিনী পূর্ণিমার এই তিথিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা আকাশে উড়ান শত শত ফানুস। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ফানুস বাতি বানিয়ে আকাশে উড়িয়ে গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ বা উৎসর্গ করেন ভক্তরা। 

আরো পড়ুন:

বান্দরবান বীর বাহাদুর স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ডচিংপ্রু বলেন, ‘প্রতিবছরের তুলনায় এবারের আয়োজন কিছুটা কম থাকবে জেনে খারাপ লাগছে। তবে, এটা জেনে ভালো লাগছে যে শেষের দিন রথের পেছনে ভিন্ন ভিন্ন গানের পরিবর্তে উপগুপ্ত বুদ্ধকে উদ্দেশ্য করে গাথা প্রচার করা হবে।’

বান্দরবান সরকারি কলেজের ছাত্র মংবানু মার্মা বলেন, ‘বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা তিন মাস বর্ষাবাস পালন করার পর অপেক্ষায় থাকেন এই দিনটির জন্য। মঙ্গল রথযাত্রা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পার্বত্য অঞ্চল পাশাপাশি সারা দেশে শান্তি বয়ে আসুক প্রবারণা পূর্ণিমায় ভগবানে কাছে এই প্রার্থনা করবো।’

বান্দরবানে উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি অংচমং মারমা জানান, প্রথমদিন ১৭ অক্টোবর বিকেল ৫টায় পুরাতন রাজবাড়িতে অরহৎ উপগুপ্তকে উদ্দেশ্যে করে নির্মিত রথ প্রথমে ঐতিহ্যবাহী রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে অবস্থানরত আসাংম্রাইকে (গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ করে) বন্দনা করার উদ্দেশ্যে গমন। সেখানে বন্দনা শেষে উজিনী পাড়া বৌদ্ধ বিহারে অবস্থানরত পদমুং আসাংকে (গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ করে) বন্দনা করার উদ্দেশ্যে গমন। পুনরায় পুরাতন রাজবাড়িতে ফেরৎ নিয়ে আসা হবে। পরেদিন বিকেল ৪টায় পুরাতন রাজবাড়ি থেকে রথে উপবিষ্ট উপগুপ্ত অরহৎকে বান্দরবান শহরে বসবাসরত এবং দূর দূরান্ত থেকে আগত পুণ্যার্থীদের বন্দনার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করা হবে। পরে রথ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে প্রবারণা পূর্নিমা উৎসব পরিসমাপ্তি হবে। 

বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, ‘বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সাদা পোশাকে ও মোবাইল কোর্ট টিম টহলে থাকবে। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

চাইমং/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়