ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৩০ ১৪৩১

সেই আভার মুখে আনন্দের হাসি

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ১৫ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ১৯:৪৪, ১৫ অক্টোবর ২০২৪
সেই আভার মুখে আনন্দের হাসি

বাবা আল-আমিনের সঙ্গে আভা

এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন বাবা আলামিন। তার লাশ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় মেয়ে সুমাইয়া আমিন তানহা আভাকে। বাবার মৃত্যু শোক বুকে চেপে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছিল তার। ফল প্রকাশের পর অবশেষে আনন্দের হাসি ফুটেছে আভার। তবে আনন্দের দিনে বাবা পাশে নেই বলে আনন্দে কানিকটা ভাটাও পড়েছে তার।

মৃত্যুশোক নিয়ে পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থী আভা পেয়েছেন জিপিএ ৩.৫০। তার পুরো নাম সুমাইয়া আমিন তানহা ওরফে আভা। তার বাবা আল-আমিন শেখ গত ৮ জুলাই রাতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন।
আভা খুলনার সরকারি পাইনিয়ার গার্লস কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৩.৯২।

ফলাফলের জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানিয়ে আভা বলেন, ‘বাবা আজ বেঁচে থাকলে সবার চেয়ে বেশি খুশি হতেন। পরীক্ষা চলাকালেই বাবাকে হত্যা করে খুনিরা। তার লাশ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষায় অংশ নিই। পরীক্ষা শেষ করে বাড়িতে আসার পর বাবার লাশ দাফন করা হয়।’

উল্লেখ্য, আভার আইসিটি পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় হত্যার শিকার হন তার বাবা আল-আমিন। সারা রাত বাবার লাশ সামনে নিয়ে বোবার মতো অপলক চেয়ে ছিলেন তিনি। এরপরও সবার পীড়াপীড়িতে নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সকালে পরীক্ষার হলে যান এবং পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষা শেষে বাড়িতে এসেই প্রিয় বাবাকে চিরবিদায় জানান এবং এতিম মেয়েটি পরে আরও একটি পরীক্ষায় অংশ নেন। তারপর পরীক্ষা স্থগিত হয়।

কৃতি শিক্ষার্থী আভা তার বাবার স্মৃতি স্মরণ করে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘অসুস্থ থাকার কারণে পরীক্ষায় অংশ নিতে অনীহা ছিল কিন্তু তার বাবার উৎসাহে পরীক্ষায় অংশ নিই। প্রতিদিন বাবা আমাকে সঙ্গে করে পরীক্ষার হলে নিয়ে যেতেন এবং নিয়ে আসতেন। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর একাই যাতায়াত করতে হয়। এ কারণে ফলাফল যা হয়েছে তাতেই আমি খুশি। বাবা থাকলে হয়তো ফলাফল আরও ভালো হতো।’ 

আভার মা রাশনা শারমিন হ্যাপি বলেন, ‘মেয়ের এই কৃতিত্বের পিছনে সম্পূর্ণ দাবিদার তার বাবা। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়েই সে পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু তার বাবার মৃত্যুর পর সেই স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতেই সে পরীক্ষা সম্পন্ন করে। আজ তার বাবা বেঁচে থাকলে সব থেকে বেশি খুশি হতেন। মেয়ের ফলাফলে পরিবারের সকলেই খুশি হয়েছে।’

আভা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান।

নুরুজ্জামান/সনি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়