পর্যটকদের অপেক্ষায় রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
রাঙামাটি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর পাটাত দৃশ্যমান হওয়ায় অনেক পর্যটক আসতে শুরু করেছেন
পানিতে ডুবে থাকা রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু ৫৬ দিন পর দৃশ্যমান হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটন করপোরেশনের এই সেতুটি দৃশ্যমান হয়। জমে থাকা আবর্জনা ও কচুরিপানা পরিষ্কারের পর শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) পর্যটক ও স্থানীয়দের চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ দিকে সেতুসহ পর্যটন এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ শুরু হবে।
পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে ২৩ আগস্ট ডুবে যায় রাঙামাটিতে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন। এরপর নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে সেতুর ওপর চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয় পর্যটন করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
পর্যটন করপোরেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৭০ দশকের শেষের দিকে রাঙামাটিকে পর্যটন জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৪ সালে পর্যটন করপোরেশন পর্যটকদের আকর্ষণ করতে কাপ্তাই হ্রদের মধ্যখানে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করে। এই সেতুটির সৌন্দর্যটি উপভোগ করতে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক রাঙামাটি ভ্রমণে ছুটে আসেন।
শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু সংখ্যক পর্যটক পরিবার-পরিজন নিয়ে ঝুলন্ত সেতু বেড়াতে এসেছেন। চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা শারমীন বলেন, ‘অনেকদিন পর রাঙামাটিতে ঘুরতে এসেছি। ঝুলন্ত সেতুটি এখন উন্মুক্ত হওয়ায় দেখে খুবই ভালো লাগছে। সেতুটি আরো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা প্রয়োজন।’
রাঙামাটির স্থানীয় পর্যটক অনয় বলেন, ‘সেতুটি অনেকদিন পানির নিচে ছিল। গতকাল থেকে সেতুর পাটাতন দৃশ্যমান হয়েছে। এ কারণে পরিবার নিয়ে ছুটির দিনে একটু ঘুরতে আসলাম।’
রাঙামাটি পর্যটন নৌযান ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘৫৬ দিন পর রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু থেকে পানি নেমে গেছে। সেতু এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। গতকাল পানি কমে গেলেও আজকে সেতু পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।’
রাঙামাটি ট্যুরিষ্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, ‘ঝুলন্ত সেতু থেকে পানি কমে গেলেও আমরা এখনো চিন্তায় আছি পর্যটকরা আসবেন কিনা সেটি নিয়ে। বিশেষ করে রাঙামাটিতে সরকারিভাবে পর্যটকদের আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। গত বুধবার রাঙামাটির পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সব সংগঠনের সদস্যরা পুলিশ সপার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা আমাদের একটা আশ্বাস দিয়েছেন, প্রবারণা পূর্ণিমার পর হয়তো পর্যটক ভ্রমণে যে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে তা প্রত্যাহার হতে পারে।’
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর ঝুলন্তু সেতু উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য। আজকে সকাল থেকে শতাধিক পর্যটক ঝুলন্ত সেতুতে এসেছেন। বৃষ্টি থাকার কারণে সেতুটির রঙের কাজ বাকি আছে। বৃষ্টি কমে গেলে পর্যটন স্পটটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হবে।’
বিজয়/মাসুদ