ঢাকা     মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৬ ১৪৩১

প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে: রিজভী

সাভার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ২২ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ০৯:২০, ২২ অক্টোবর ২০২৪
প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে: রিজভী

প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের কথা বলছেন। সংস্কার করুক, তবে এটা যেন উপসংহারহীন না হয়। একটা ইতি টানতে হবে, এটা যদি অনন্তকাল চলতে থাকে, তাহলে প্রশ্ন দেখা দেবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল, প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে সাভারের ব্যাংক কলোনী এলাকায় শহীদ শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনের বাসা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারে হতাহত ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তিনি। এ সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতদের সহায়তা করতে গঠিত ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা ও আহতদের ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। সাভারের আটটি পরিবারকে এসব অনুদান দেয় বিএনপি। 

রুহুল কবীর রিজভী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। আপনারা নির্বাচন, পুলিশ, বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসন নিয়ে যে কমিশন করেছেন সেগুলো যাতে দ্রুত কাজ করে। দ্রুত রিপোর্ট দেয় এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সংস্কারের মূল কাজ করবে গণতান্ত্রিক দল। যারা গণতন্ত্রের জন্য গত ১৫ বছর সংগ্রাম করেছে, তাদের করতে হবে। সেটি দেরি করলে আন্দোলনের মূল স্পিরিট বাধাগ্রস্ত হবে।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া, তাদের পাশে থাকা ও সবসময় খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য একটি সংগঠন করে দিয়েছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। সেটির নাম, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’। এটার উদ্দেশ্য জুলাই মাস থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনা যে নরহত্যা করেছে, এতে দেড় হাজারের মতো মানুষ নিহত হয়েছে। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কলেজ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আত্মদানের মধ্য দিয়ে আমরা আজকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি, তাদের সহায়তা করা। 

তিনি আরও বলেন, আগে কি হতো, পরিশেষে ছত্রভঙ্গ করে দিত। এই একটা অবদান মুক্তির সুবাতাস নিচ্ছি। যাদের জন্য তাদের পাশে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল যারা ১৬ বছর ধরে লড়াই করেছে তারাইতো আন্দোলনের চূড়ান্ত পটভূমি রচনা করেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সবখানে যাচ্ছি। যেখানে যেখানে আহত নিহত আছে তাদের দেখতে যাচ্ছি। পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। এতে সাংবাদিকও নিহত হয়েছে। আমরা বিএনপি পরিবার সারা দেশে সবার কাছে যাচ্ছি। তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। তাদের খোঁজ নিচ্ছি দেশনায়ক তারেক রহমানের পক্ষ থেকে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনাদের সামনে রেখে আমাদের একটাই কথা আছে, তা হলো, এখনও সেই ভয়ঙ্কর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা তাদের কালো টাকা ও বেআইনি অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছে। গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা গোলাগুলি করেছে, অস্ত্র নিয়ে তারা সেখানে গুলি করেছে। এই যে জনঅরণ্যের মধ্যে তারা যে লুকিয়ে আছে এবং প্রয়োজন মতো তারা দেশটাকে অস্থিতিশীল করবে। 

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বারবার আমরা চাপ দিয়েছি আপনাদের কোনো ব্যর্থতার জন্য যদি ফ্যাসিবাদের পুনর্জীবন ঘটে এর দায় আপনাদের সবার। এত আত্মত্যাগ এত শহীদ তাদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলছি, আপনারা কেন বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করতে পারছেন না। কেন আপনারা যেসব অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাতিল করে দুর্বৃত্ত যারা অস্থিতিশীলতা ঘটাচ্ছে, তাদের গ্রেপ্তার করে শান্তি ফিরিয়ে আনছেন না। 

তিনি বলেন, গণতন্ত্রকামী সব দল তো আপনাদের সমর্থন করেছে, আমরা প্রতিমুহূর্তে আপনাদের দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আপনাদের প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন করছি। পাশাপাশি আমরা এও বলেছি মানুষ না খেয়ে থাকে এই পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হয়। মানুষ যাতে দুমুঠো খেতে পারে, এজন্য বাজার সিন্ডিকেট, মার্কেট সিন্ডিকেট, যারা যারা এত দিন ধরে এমন করে রেখেছে, তাদের গ্রেপ্তার করুন, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। 

তিনি আরও বলেন, আমরা অল্প কিছু প্রচেষ্টা দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু ব্যাপক প্রচেষ্টা আমরা এখনও দেখতে পাচ্ছি না। গণতন্ত্র শান্তির পক্ষে যাতে মানুষ বসবাস করতে পারে, খোলা গলায় যাতে মানুষ সমালোচনা করতে পারে, কথা বলতে পারে। আইনের শাসন থাকবে, কে কোন দল করে সেটা বড় কথা নয়। যে অপরাধ করবে, পুলিশ তাকে ধরবে, বিচারের আওতায় আনবে। এটাই তো গণতন্ত্র।

আরিফুল/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়